বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। আর তার প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসে। আর এবার তাদের টার্গেট যে মহিলা ভোটব্যাঙ্ক তা স্পষ্ট হয় তৃণমূল ভবনের এক সাংবাদিক বৈঠকেই। এই সাংবাদিক বৈঠক থেকেই পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান, লোকসভা ভোটের ময়দানকেই পাখির চোখ করে এগোচ্ছে তৃণমূল শিবির। আর সেই কারণেই সম্প্রতি ঢেলে সাজানো হয়েছে দলের মহিলা সংগঠন। তারই ফলশ্রুতি স্বরূপ ছয় জেলায় জেলা সভানেত্রী হিসেবে নতুন মুখ নিয়ে আসা হয়েছে।
এরই পাশাপাশি শুক্রবার তৃণমূল ভবনে বিশেষ বৈঠকে বসেছিল মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস। এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য দাবি করেন, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে নারীদের উন্নতি কল্পে যে সব কথা শোনানো হচ্ছে আদতে তার কোনও ভিত্তিই নেই। পুরোটাই নির্বাচনে মহিলা ভোট নিজেদের দখলে রাখার চেষ্টা মাত্র। আদতে ভারতের নারী জাতিকে বোকা বানাতে চাইছে বিজেপি। আর এই ঘটনাকে সামনে আনতেই দেড় মাস ধরে চলবে ম্যারাথন কর্মসূচি। আগামী ২২ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে। যা চলবে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এই কর্মসূচিতে নেওয়া হবে শপথ। এই শপথ সংঘবদ্ধ হয়ে কাজ করার। সেই কারণে এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সংঘবদ্ধ শপথ’। মহিলাদের শপথ বাক্য পাঠ করাবে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস। আর এই দেড় মাসে জেলায় জেলায় মোট ১০ হাজার সভা করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে। একইসঙ্গে ব্লকে ব্লকে ‘চলো পাল্টাই’ ডাক দিয়ে চলবে মহিলাদের মিছিল। চলো পাল্টাই কর্মসূচিতে মুখে কালো কাপড় বাঁধবেন মহিলারা।
উল্লেখ্য, চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে মহিলা ভোটব্যাঙ্কে বাড়তি নজর দিচ্ছে শাসক-বিরোধী সব পক্ষই। সূত্রের খবর, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চাইছে লোকসভায় ৩৩ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত করতে। সেক্ষেত্রে বাংলার থেকেও ১৪টি আসনে মহিলা প্রার্থী দিতে চাইছে পদ্ম শিবির। সেখানে বাংলায় মহিলাদের সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত যে অনেক আগেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাও এদিন স্পষ্ট করে দেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এরই পাশাপাশি তৃণমূলের মহিলা ভোটব্যাঙ্কে যাতে বিজেপি বা অন্য কোনও দল ভাগ বসাতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে মরিয়া শাসক শিবিরও। এবার তাই মহিলাদের জন্য রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পগুলি নিয়ে গোটা বাংলাজুড়ে মহিলাদের মনের আরও কাছাকাছি পৌঁছে যেতে চাইছেন চন্দ্রিমারা।