এবার সেবি অভিযানের পথে তৃণমূল। এগজিট পোলের রেকর্ড দেখিয়ে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগকারীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা হয়েছিল, এই অভিযোগ তুলে এবার সেবির চেয়ারপার্সনকে চিঠি পাঠিয়ে সাক্ষাৎ এবং আলোচনার জন্য সময় চাইল বঙ্গের শাসক দল তথা বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ ব্লকের অন্যতম প্রধান মুখ তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের সই করা ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বুথফেরত সমীক্ষার মাধ্যমে কারসাজি করে শেয়ার-সূচকে কারচুপি করা হয়েছিল।
এদিকে তৃণমূল সূত্রে খবর, আগামী মঙ্গলবার মুম্বইয়ে সেবির সদর দফতরে যাবে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। ওই দলে থাকবেন লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যসভার দুই সাংসদ সাগরিকা ঘোষ ও সাকেত গোখলে এবং লোকসভার সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল। তৃণমূলের তরফে এই প্রতিনিধি দলে থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে শরদ পাওয়ার, উদ্ধব ঠাকরের দলের প্রতিনিধিদেরও। এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে, দু’টি দলই নিজেদের উপস্থিতি নিয়ে তাদের আশ্বস্ত করেছে। সূত্রে এ খবরও মিলছে এর আগে তিন বার চিঠি পেয়েও আনুষ্ঠানিক ভাবে সময় দেয়নি সেবি। তাই এবার মুম্বইয়ে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল।
তৃণমূলের তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে, ‘বিভ্রান্তিকর’ এগজ়িট পোলকে কাজে লাগিয়ে অনৈতিক ইনসাইড ট্রেডিং হয়েছে। দু’পাতার এই চিঠিতে ডেরেকরা লিখেছেন, কী ভাবে নানাবিধ চ্যানেলের বুথ ফেরত সমীক্ষায় দেখানো হয়েছিল বিজেপি বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরছে এবং এর জেরেই কী ভাবে ৩ জুনের শেয়ার মার্কেট সূচক শিখরে ওঠে। নিফটি সূচক গিয়ে দাঁড়ায় ৭৩৩ পয়েন্টে এবং সেনসেক্সের সূচক পৌঁছয় ২৫০৭ পয়েন্টে। এরপর ভোটের রেজ়াল্ট বেরোতেই খেলা ঘুরে যায়। তৃণমূলের অভিযোগ, বুথ ফেরত সমীক্ষার ফল ভুল প্রমাণিত হতেই ধস নামে শেয়ার মার্কেটে। বিপুল ক্ষতির মুখে পড়ে সাধারণ মানুষের বিনিয়োগ। তৃণমূলের দাবি, এতে ভুগেছেন পশ্চিমবঙ্গের মানুষেরাও। কারণ, কিছু চ্যানেলে সমীক্ষায় পশ্চিমবঙ্গের যা ফলাফল দেখানো হয়েছিল এবং বাস্তবে যা হয়েছে, তার মধ্যে ১৫০ শতাংশ ফারাক।
এই অবাস্তব ভবিষ্যৎবাণীর জন্য দেশ জুড়ে বিনিয়োগকারীরা ৩ জুন ৩০ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে এবং পরের দিনই ভরাডুবি হয় তাঁদের। বুথফেরত সমীক্ষার ফলাফলের ওপর শেয়ার মার্কেটের ওঠাপড়া অনেকটাই নির্ভর করে। তাই এই ধরনের ভুলের ক্ষেত্রে কে আসল দোষী, তা তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন বলেই মনে করে তৃণমূল। সেই কারণেই সেবি-প্রধানের সঙ্গে দেখা করে এর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত এবং বিস্তারিত আলোচনা চায় তৃণমূল।