এবার কয়লা পাচার নিয়ে পাল্টা বিজেপিকেই নিশানা করল তৃণমূল৷ এতদিন কয়লা পাচার নিয়ে বারংবার বিজেপির নিন্দার মুখে পড়তে হয়েছে বাংলার শাসকদলকে। এবার সেই কয়লা পাচার নিয়ে বিজেপিকেই তীব্র আক্রমণ করল তৃণমূল। অমিত শাহের সঙ্গে এক কয়লা ব্যবসায়ীর ছবি পোস্ট করে শাহ তথা বিজেপিকে আক্রমণ করতে দেখা গেল তৃণমূলকে। তৃণমূলের তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে, অন্ডাল বিমানবন্দরে অমিত শাহকে শুক্রবার বিদায় জানাতে যান এই ‘কয়লা মাফিয়া’। এই নিয়ে অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল থেকে একটি পোস্টও করে রাজ্যের শাসক দল। তৃণমূলের সেই পোস্টে লেখা, ‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অন্ডাল বিমানবন্দরে ছাড়তে যাবেন কে? কুখ্যাত কয়লা মাফিয়া জয়দেব খাঁ! ক্রোনোলজিটা এবার স্পষ্ট হল!’ একইসঙ্গে প্রশ্ন তোলা হল, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে এহেন খাতির না থাকলে কি বিএসএফকে ‘ম্যানেজ’ করে পাচার চালানো যায়?’
প্রসঙ্গত, নির্বাচনের প্রচারে প্রায়ই বাংলায় আসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শুক্রবারও তিনি রাজ্যে এসে তিন লোকসভা কেন্দ্রে প্রচার করেন। রানাঘাটে একটি এবং বীরভূমে দুটি জনসভা করেন তিনি। এরপর অন্ডাল বিমানবন্দর হয়ে তিনি দিল্লি ফেরেন। এদিন অমিত শাহকে বিদায় জানাতে উপস্থিত ছিলেন অনেকেই। তাঁদের মধ্যেই নজরে আসেন জয়দেব খাঁ নামে এই ব্যক্তি।
এই ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে দেওয়া হয়েছে একটি চিঠিও। গত ১০ মে অন্ডাল এয়ারপোর্ট মারফত এসেছিলেন অমিত শাহ৷ সেই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কোন নেতারা অমিত শাহের সঙ্গে এয়ারপোর্টে উপস্থিত থাকবেন। আর এই তালিকায় থাকা জয়দেব খানকে নিয়েই তৃণমূলের আপত্তি। সূত্রে খবর, এদিন মোট ১৬ জন বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন। যার মধ্যে ছিলেন কয়লা ব্যবসায়ী জয়দেব খানও। এই সূত্র ধরেই তৃণমূলের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ‘ভোট প্রচারে এসে কোল মাফিয়াদের ইমিউনিটি দেওয়া হচ্ছে। অন্ডাল বিমানবন্দরে অমিত শাহকে স্বাগত জানাতে জয়দেব খান ছিলেন।’ একটা ছবি ও লেটার হেডে জয়দেব খানের উপস্থিতির চিঠি দেখিয়ে এই অভিযোগ আনে তৃণমূল কংগ্রেস।
এরপরই এদিন রাজ্যের মন্ত্রী, ‘শশী পাঁজা অভিযোগ করে বলেন, বিজেপির ওয়াশিং মেশিন তাদের জন্যেও। যারা অপরাধী তাদের জন্যেও। ফুল মালা ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা জানাতে অন্ডালে অমিত শাহকে কারা কারা উপস্থিত ছিলেন। জয়দেব খান উপস্থিত ছিলেন। ফুল দিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে। সঙ্গে ছিলেন লক্ষ্মণ ঘোড়ুই। জয়দেব খান কে? দিলীপ ঘোষ-তো রোজ বড় বড় কথা বলেন। দিলীপ ঘোষ ২০২১ সালে এদের সমাজকর্মী বলে দলে নিয়েছিল। দিলীপ ঘোষের হাত ধরে এরা আশ্রয় নিয়েছিলেন। এরা হলেন প্রতিষ্ঠিত কয়লা ব্যবসায়ী। এর মধ্যে রাজু ঝা প্রয়াত হয়েছেন। এদেরকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশির সাথে দেখা হয়েছিল। আন্তরিক পরিচয় ছিল এদের।’
এদিকে জয়দেব খাঁর দাবি, তিনি স্থানীয় বিজেপি নেতা। ২০১৯ সাল অর্থাৎ গত বছর লোকসভার সময় তিনি বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন। বর্তমানে তিনি আসানসোলে বিজেপির জেলা কমিটির সদস্য। আর সেই কারণেই তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বিদায় জানাতে গিয়েছিলেন।