চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে লড়ে রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে ঘাসফুল ফোটাতে পারেননি। তবে উপনির্বাচনে সেই রায়গঞ্জে এই প্রথমবার সবুজ ঝড় তুললেন কৃষ্ণ কল্যাণী। বিজেপিকে পর্যুদস্ত করে ৪৯ হাজার ৫৩৬ ভোটে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী।
প্রসঙ্গত, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিতে ছিলেন। সেই সময় রায়গঞ্জে পদ্ম ফুটিয়েছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। মাঝে গঙ্গা দিয়ে বয়ে গিয়েছে বহু জল। নানা টানাপোড়েন দল বদল করেন কৃষ্ণ। গত ১০ মার্চ, ব্রিগেড সমাবেশ থেকে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে ঘাসফুল শিবির। সেই তালিকায় ছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রায়গঞ্জের প্রার্থী হিসাবে কৃষ্ণ কল্যাণীর নাম ঘোষণা করেন। কোমর বেঁধে প্রচারও সারেন তিনি। লোকসভা ভোটের টিকিট পাওয়ার পরেই কৃষ্ণ জানিয়েছিলেন, মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার আগে তিনি বিধায়ক এবং পিএসি চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। সেই মতো মনোনয়ন জমার আগেই স্পিকারের হাতে ইস্তফাপত্র তুলে দেন এবং তা গৃহীতও হয়। সে কারণে বিধায়ক শূন্য রায়গঞ্জে উপনির্বাচন হয়। লোকসভা ভোটে হারলেও, বিধানসভা উপনির্বাচনে এই প্রথমবার কৃষ্ণ কল্যাণীর হাত ধরেই ফুটল ঘাসফুল।
চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জ বিধানসভায় ৪৭ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। অথচ মাসখানেক পর বিধানসভা উপনির্বাচনে ৪৯ হাজার ৫৩৬ ভোটে জয়ী তৃণমূল প্রার্থী। দ্বিতীয় স্থানে বিজেপি প্রার্থী মানসকুমার ঘোষ। সাড়ে ২৫ হাজারের মতো ভোট পেয়েছেন তিনি। প্রসঙ্গত, তেইশের পঞ্চায়েত নির্বাচনের দুসপ্তাহ আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখান মানসবাবু। শোনা যায়, রায়গঞ্জের সাংসদ কার্তিক পালের সুপারিশেই সেই মানসকুমার ঘোষকে উপনির্বাচনে প্রার্থী করা হয়। তবে ‘দলবদলু’ মানসবাবুর নাম ঘোষণার পর থেকে দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছয়। গেরুয়া শিবিরের অনেকের মতে, প্রার্থী নির্বাচনের ভুলেই রায়গঞ্জের মতো শক্ত ঘাঁটিতে ঘাসফুল ফোটাতে পারলেন তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী। মানসকুমার ঘোষের পরিবর্তে অন্য কাউকে প্রার্থী করলে হয়তো বিজেপিই রায়গঞ্জ বিধানসভায় ক্ষমতা ধরে রাখতে পারত। কৃষ্ণ কল্যাণীর জয়ের পর সবুজ আবির মেখে বিজয়োল্লাসে মেতেছেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা।