ভুয়ো জব কার্ড ইস্যুতে মোদির খোঁচায় জবাব তৃণমূলের

একশো দিনের কাজ নিয়ে গত কয়েক মাস যাবৎ বারাবর সরব হতে দেখা গেছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। এমনকি আন্দোলনের পথেও নামতে দেখা গেছে তাঁদের। এবার লোকসভা নির্বাচনের আগে এই ১০০দিনের কাজকেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগকে অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে বাংলার শাসকদল। এদিকে শনিবার, কৃষ্ণনগরের সভা থেকে একশো দিনের কাজের প্রকল্পকে নিয়ে সরকারকে খোঁচা দিতে দেখা গেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। প্রত্যুত্তরে মোদি ‘মিথ্যাচার’ করছেন বলে পালটা আক্রমণে গেল তৃণমূল কংগ্রেস।

প্রসঙ্গত, একশো দিনের প্রকল্পে রাজ্যে লাখ লাখ ভুয়ো জব কার্ড তৈরি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মোদি। কৃষ্ণনগর থেকে তিনি যে বক্তব্য রাখেন তাতে উঠে আসে এই প্রকল্পে দুর্নীতির প্রসঙ্গ। এমনকি মোদি শাসকদলকে বিদ্ধ করে এদিন এও বলেন,  ‘এরা চাইছে কেন্দ্র সরকারের প্রকল্পের সুবিধা কারা পাবে সেটা তৃণমূলের তোলাবাজরা ঠিক করবে। এখানে ২৫ লাখ ভুয়ো জবকার্ড আছে। যে জন্মায়নি তার নামেও কার্ড হয়েছে।’

মোদির এই ভাষণের পরেই পালটা আক্রমণের পথে হাঁটে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আপনি কৃষ্ণনগর থেকে মিথ্যা ভাষণ দিচ্ছেন। আপনারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা দেখিয়ে বাংলায় যাঁরা একশো দিনের কাজ করেছে, তাঁদের টাকা বন্ধ করে দিয়েছেন।’ ভুয়ো জব কার্ড নিয়েও প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের সমালোচনাও করেন শশী। তিনি বলেন, ‘বাংলায় নয়, সবথেকে বেশি ভুয়ো জব কার্ড হয়েছে উত্তর প্রদেশে।’ সেখানে টাকা বন্ধ করে রাখা আছে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শশী পাঁজা।

এদিকে ইতিমধ্যেই, রাজ্যের প্রায় ৫৯ লাখ জব কার্ড হোল্ডারদের রাজ্যের তহবিল থেকে অর্থ প্রদানের ব্যবস্থা শুরু করেছে রাজ্য সরকার। ১ মার্চের মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় জব কার্ড হোল্ডারদের অ্যাকাউন্টে সেই টাকা পাঠানো হয়েছে। জেলায় জেলায় এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পৃথক প্রচারের আয়োজন করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।

একশো দিনের কাজের টাকা নিয়ে কেন্দ্র – রাজ্যের দড়ি টানাটানির দীর্ঘদিনের। রাজ্যে যে পরিমাণ ভুয়ো জব কার্ড তৈরি হয়েছে এবং এই প্রকল্পে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অর্থ প্রদান বন্ধের পথে হেঁটেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাঁদের দাবি, এই কেন্দ্রীয় প্রকল্পে যে দুর্নীতি হয়েছে, তার তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত অর্থ বরাদ্দ করা যাবে না। পালটা তৃণমূলের বক্তব্য, রাজ্যে একাধিক কেন্দ্রীয় পরিদর্শক দল এসেছে। এমনকি, এই প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট কেন্দ্রকে পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। এরপরেও অর্থ বরাদ্দ বন্ধ রাখা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen − 13 =