শ্লীলতাহানির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবারই নিজের প্রতিক্রিয়া দেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বলেন, ‘সত্যের জয় হবেই।’ তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচিনী সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও ইঙ্গিত প্রকাশ করেন তিনি। সঙ্গে রাজ্যপাল এও জানান, ‘আমি প্রকৌশলী বানানো গল্পের সামনে ভয় পাব না। কেউ যদি আমাকে অপমান করে নির্বাচনী সুবিধা পেতে চায়, ভগবান তাঁদের মঙ্গল করুন। কিন্তু বাংলায় দুর্নীতি ও সহিংসতার বিরুদ্ধে আমার লড়াই থামাতে পারবে না।’
এদিকে ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী, সংবিধানের ৩৬১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে পদাসীন কোনও রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি বা দেওয়ানি মামলা করা যায় না বলে জানা যাচ্ছে। এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত বা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করা যায় না। শুধু তাই নয়, এই ধরণের মামলা আদালতে গ্রাহ্য হয় না। বছর কয়েক আগে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট এক রায়ে স্পষ্ট করে দিয়েছে, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি মামলার শুনানি করবে না আদালত।
অন্যদিকে, কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে রাষ্ট্রপতির মুখাপেক্ষী হতে চলেছে তারা। গোটা ঘটনার তদন্ত করে রাষ্ট্রপতিকে একটি রিপোর্ট পাঠাবে কলকাতা পুলিশ। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে রাষ্ট্রপতির কাছে অনুমোদন চাইবে তারা। তবে এব্যাপারে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার ভাবনাও রয়েছে পুলিশকর্তাদের একাংশের মধ্যে। এব্যাপারে আইনজীবী থেকে শুরু করে আইনজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলছেন তাঁরা। এদিকে, রাজভবনে রাজ্যের সমস্ত মন্ত্রীর প্রবেশ নিষিদ্ধ করেন রাজ্যপাল। এমনকি, সব সরকারি অনুষ্ঠান বয়কট করবেন তিনি বলেও জানিয়ে দিয়েছেন। এদিকে একটি প্রতিক্রিয়ায় অভিযোগকারী ওই মহিলা জানিয়েছেন, ‘অতীতে অন্য কেউ একই ধরনের উদ্বেগ উত্থাপন করেছিল। এখন আমি জানি, তারা সত্য ছিল। যদি আমি আজ আমার আওয়াজ তুলে না ধরি, তবে অন্য মহিলাদের সঙ্গে এটি ঘটবে!’ মহিলা তাঁর অভিযোগে জানিয়েছেন, গত ১৯ এপ্রিল রাজ্যপাল ওই মহিলাকে বলেন সিভি নিয়ে তাঁকে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার জন্য। সেইমতো তিনি ২৪ সে এপ্রিল দুপুর বারোটা ৪৫ মিনিট নাগাদ অফিস রুমে যান রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে। সেখানে রাজ্যপালের তরফে মহিলাকে কু প্রস্তাব দেওয়া হয় এবং তাঁকে শ্লীলতাহানি করা হয়।
তারপর ওই মহিলা ওই অফিস থেকে বেরিয়ে যান। এরপর ২ মে রাজ্যপাল ওই মহিলাকে আবারও ডাকেন এবং তার ফলে ওই মহিলা ভয় পেয়ে যান। তবে এদিন রাজ্যপালের অফিসে ওই মহিলা এক সুপারভাইজারকে সঙ্গে নিয়ে যান। সুপারভাইজারকে ওই অফিস থেকে বেরিয়ে যেতে বলা হয় বলে অভিযোগ। তারপর আবারও একই পরিস্থিতির শিকার হন ওই মহিলা। রাজ্যপাল বিভিন্ন কথা প্রথমে বলে তারপর আবারও কু প্রস্তাব দেন ওই মহিলাকে । রাজভবনে চাকরি দেওয়া হবে বলেও রাজ্যপাল প্রতিশ্রুতি দেন যেহেতু ওই মহিলা অস্থায়ী কর্মী।