নির্বাচন পরবর্তী পর্বে আবার অশান্ত মুর্শিদাবাদ

পঞ্চায়েত ভোট মিটলেও অশান্তির আগুন রয়েই গেছে মুর্শিদাবাদে। রবিবার সকাল থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ এবং রানিনগর। সামশেরগঞ্জে তৃণমূল এবং নির্দল প্রার্থীর দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। এরপর সামশেরগঞ্জ থেকে উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু তাজা বোমা। অন্য দিকে, মুর্শিদাবাদেরই বেলডাঙায় কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলার অভিযোগ ওঠে। তার প্রতিবাদে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস কর্মীরা। অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। এদিকে রানিনগরে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের উপরে বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় আহত হন চার তৃণমূল কর্মী, এমনটাই দাবি জোড়াফুল শিবিরের। এদিকে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ নস্যাৎ করা হয়েছে কংগ্রেসের তরফ থেকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে সামশেরগঞ্জের হীরানন্দপুর এলাকায় শুরু হয় বোমাবাজি। তৃণমূল এবং নির্দলের এই দু’পক্ষের সংঘর্ষে বাধে। দু’পক্ষের কয়েক জন কর্মী-সমর্থকের বাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। এলাকা থেকে ফাটা বোমার খোল উদ্ধার করে পুলিশ। সামশেরগঞ্জ থানারই দুর্গাপুর থেকে বেশ কিছু তাজা সকেট বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। কংগ্রেসের অভিযোগ, বেলডাঙায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা রাতভর তাদের দলীয় কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে লুটপাট এবং ভাঙচুর চালিয়েছে। এর প্রতিবাদে সকাল ১০টা নাগাদ বেলডাঙা থানার সামনে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে কংগ্রেস। বহরমপুর পুলিশ জেলার সুপার সুরিন্দর সিংহ জানান, ‘কোনও রকম অভিযোগ পেলেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। সামগ্রিক পরিস্থিতি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।’ অন্যদিকে, রানিনগর থানার চাকরানপাড়া গ্রামে তৃণমূল কর্মীদের বাড়িতে ঢুকে তাঁদের বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ওঠে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। তাতে আহত চার তৃণমূল কর্মী সমর্থককে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় গোধনপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। তাঁদের মধ্যে মেরাজ শেখ নামে এক তৃণমূল কর্মীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয় বলে জানানো হয়েছে তৃণমূলের তরফ থেকে। এরপরই  গ্রামে বসানো হয়ে পুলিশ পিকেট। কংগ্রেস অবশ্য তৃণমূলের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

রবিবার রাতে উত্তপ্ত হয় খড়গ্রামও। সেখানে ব্যালট বাক্স বদলের গুজবকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। তা নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে আক্রান্ত ‘হয়েছে’ পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে খবর, স্ট্রংরুমের ভিতর থেকে সিল করা ব্যালট বাক্স বদলে ফেলা হচ্ছে, এই অভিযোগ তুলে স্ট্রংরুমের সামনে ব্যাপক জমায়েত শুরু করেন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই উত্তেজনা তৈরি হয় এলাকায়। খবর পেয়ে বাড়তি বাহিনী-সহ ঘটনাস্থলে পৌঁছন খড়গ্রাম থানার ওসি। অভিযোগ, জমায়েত সরাতে গেলে তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে একের পর এক ইট ছোড়া হয়। ভাঙচুর করা হয় পুলিশ ভ্যান। গণ্ডগোলের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কেন্দ্রীয় বাহিনী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three + six =