রবিবার মধ্যরাতে গার্ডেনরিচের ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত গার্ডেনরিচের মোল্লাবাগান এলাকায় ভেঙে পড়ল নির্মীয়মাণ বহুতল। এই বহুতলের আশপাশে ছিল প্রচুর ঝুপড়ি। বহুতল সেগুলির উপরই ভেঙে পড়ে। এর জেরে বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। খবর পেয়েই রাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছন কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা। পৌঁছয় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলাকারী দলও। ভগ্নস্তূপের মধ্যে থেকেই চলে উদ্ধারকাজ। এখনও পর্যন্ত ১৫ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচ জন এসএসকেএমের ট্রমা কেয়ারে চিকিৎসাধীন। প্রত্যেকেরই আঘাত গুরুতর বলে জানা গিয়েছে। এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকের থাকার আশঙ্কা রয়েছে। তাঁদের খোঁজে চালানো হচ্ছে উদ্ধারকাজ। এখনও পর্যন্ত ২ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছে। মৃত ২জনই মহিলা বলে জানা গিয়েছে। তবে মৃত এবং আহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গার্ডেনরিচের বিভিন্ন এলাকাতেই দীর্ঘদিন ধরেই বেআইনি নির্মাণকাজের অভিযোগ রয়েছে। এই বহুতলের ক্ষেত্রেও বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চার তলা তৈরির পরই কাজ বন্ধ করার অনুরোধ করেছিলেন বহুতলের আশপাশের ঝুপড়ির বাসিন্দারা। কিন্তু সেই অনুরোধ কর্ণপাত না করার অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। রবিবারই ওই বহুতলের পাঁচতলার ঢালাইয়ের কাজ হয়েছিল। তার পরই রাতে তা হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে।
ঘটনাস্থল যথেষ্ট ঘিঞ্জি হওয়ায় দমকল এবং উদ্ধারকারী দলকে ভিতরে যেতে বেগ পেতে হয়। তবে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং দমকল পৌঁছে উদ্ধারের কাজ শুরু করে। এনডিআরএফ ডগ স্কোয়াড থেকে ২টি কুকুরকেও সঙ্গে করে আনে। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কেউ আটকে থাকলে যাতে শনাক্ত করা যায়, তার জন্য এই কুকুরের সাহায্য নেওয়া হয়েছে। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল-সহ কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছন।
ঘটনার খবর পেয়েই সেখানে আসেন বিজেপি নেতা ইন্দ্রনীল খানও। কিন্তু তাঁকে ঘটনাস্থল পর্যন্ত যেতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। এই প্রসঙ্গে ইন্দ্রনীল বলেছেন, ‘উদ্ধারকাজে হাত লাগানোর জন্য এসেছি। এলাকায় বহু অবৈধ নির্মাণ। পুলিশ প্রশাসন বা কর্পোরেশন যদি সঠিকভাবে কাজ করত তাহলে এই দুর্ঘটনা হত না। রাজনীতি নয়, এখন মানুষের জীবন গুরুত্বপূর্ণ।’