ভালভ ফাটল বাগমারি বুস্টার পাম্পিং স্টেশনের, পানীয় জল সঙ্কটে ১৩, ১৪,৩১,৩২ ওয়ার্ড

জল সঙ্কটে কলকাতার একাংশ। বাগমারি বুস্টার পাম্পিং স্টেশনের ভালভ ফেটে উত্তর কলকাতার একাধিক ওয়ার্ডে দেখা দিয়েছে পানীয় জলের সঙ্কট। মঙ্গলবার রাতের বিরামহীন বৃষ্টিতে দিনভর যখন হাবুডুবু খেল শহর, তখন দিনের শেষেও ভোগান্তির উপসংহার সেই জল-যন্ত্রণাই। বুধবার সকালেও এই সঙ্কট অব্যাহত।

কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার আচমকাই বাগমারি বুস্টার পাম্পিং স্টেশনের ভালভ বিকট শব্দে ফেটে যায়। যেহেতু এই বুস্টার পাম্পিং স্টেশন উত্তর কলকাতার ৪টি ওয়ার্ডের পানীয় জল পরিসেবার কেন্দ্র, তাই বিপত্তির কারণে পানীয় জলশূন্য হতে পারে এলাকাগুলি। এর মধ্যে রয়েছে ১৩, ১৪, ৩১ ও ৩২ নম্বর ওয়ার্ড। অর্থাৎ উল্টোডাঙ্গা, কাঁকুড়গাছি, বাগমারির মত ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলি। এদিকে পানীয় জল না পাওয়ায়  বুধবার সকালে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে তৈরি হয়েছে এক সঙ্কটজনক পরিস্থিতি। তবে সূত্রে খবর, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্রিয় হয়েছে কলকাতা পুরসভা। জল সরবরাহ বিভাগের ডিজি সহ অন্যান্য শীর্ষ পদস্থ কর্তারা মঙ্গলবার রাতেই মেরামতির কাজে হাত দেন। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে সেই কাজ হলেও শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তা সম্পূর্ণ হয়নি। ফলে বুধবারের সকালে পানীয় জল পাননি মুচিবাজার, কাঁকুড়গাছি, ফুলবাগানসহ বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা।

প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় কর্ম দিবসের শুরুটা মোটেও সুখকর হয়নি তিলোত্তমার। রাতভর বৃষ্টিতে কার্যত। জলে ভাসছে শহর কলকাতার একটি বড় অংশ। কোথাও হাঁটু সমান, তো কোথাও কোমর সমান জলে কার্যত হাবুডুবু অবস্থা কলকাতার। ভারী বৃষ্টির কারণে জমা জলে ব্যাহত হয়েছে স্বাভাবিক জনজীবন। হাওড়া এবং শিয়ালদহ উভয় ডিভিশন এই সকাল থেকে অনিয়মিত হয়ে পড়ে ট্রেন পরিষেবা। স্বাভাবিক পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি মেট্রোতেও। অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা জলের তলায় চলে যাওয়ার কারণে বাস ছিল হাতে গোনা। ফলে অফিসে বেরিয়ে দিনশেষে ভোগান্তির অভিজ্ঞতা সম্বল করেই বাড়ি ফিরতে হয়েছে মানুষকে। তবে শুধু ভোগান্তিই নয়, এদিনের জলবন্দি শহর কলকাতা কেড়েছে তরতাজা ১০ টি প্রাণ। বেলা যত বেড়েছে, ততই জায়গায় জায়গায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। জমা জল থেকে প্রাণহানির দায় কার, তা নিয়েও রাজনৈতিক দরকষাকষি নেহাত কম হয়নি। দিনজুড়ে ঘটনার ঘনঘটার মাঝে আরও এক সংযোজন বাগমারি বুস্টার পম্পিং স্টেশনের এই বিপত্তি। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eight − two =