সন্দেশখালির ঘটনায় ভিডিও বার্তা প্রকাশ রাজ্যপালের

খোঁজ নেই সন্দেশখালির বেতাজ বাদশা শাহজাহানের। এদিকে শাহজাহানের শাগরেদ উত্তম সর্দার, শিবু হাজরাদের বিরুদ্ধে ফুঁসছে সন্দেশখালি। ক্ষোভের আগুনে জ্বলছে পোলট্রি ফার্ম, বাগানবাড়ি। প্রতিনিয়তই তাঁদের বিরুদ্ধে আসছে বিস্ফোরক অভিযোগ। এই অশান্ত পরিবেশ সামাল দিতে পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ গোটা এলাকা। এদিকে সন্দেশখালি জুড়ে জারি হয়েছে ১৪৪ ধারা। বন্ধ রাখা হয়েছে ইন্টারনেট।

এদিকে এই সন্দেশখালি ইস্যুকে সামনে রেখে আন্দোলনের তেজ আরও বাড়াতে চাইছে বঙ্গ বিজেপি ব্রিগেড। শনিবার দুপুরেই মিছিল করে সোজা রাজভবন চলে যান বিজেপি বিধায়কেরা। নেতৃত্বে বিধানসভা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একটাই দাবি, অনেক হয়েছে, এবার হস্তক্ষেপ করতে হবে রাজ্যপালকে। এর পরই রাজ্যের থেকে সন্দেশখালির পরিস্থিতি নিয়ে রিপোর্ট তলব করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এমনকি সন্দেশখালির পরিস্থিতি নিয়ে একটি ভিডিয়ো বার্তাও প্রকাশ করেন তিনি।

সন্দেশখালির অশান্ত পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেছেন, ‘সভ্য সমাজে কতটা কুৎসিত ঘটনা ঘটতে পারে তা সন্দেশখালিতে দেখা যাচ্ছে। মহিলারদের হেনস্থা এবং নিগ্রহ করা হচ্ছে। গুণ্ডারাজ চলছে সেখানে। নির্বাচিত সরকারকে দ্রত ব্যবস্থা নিতে হবে। কার্যকরী পদক্ষেপ করতে হবে। কেউ আইনকে নিজের হাতে নিতে পারে না। গুণ্ডাগিরি সেখানে বন্ধ করতে হবে। তা বন্ধ করতে সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে। আমাকে সরকারের থেকে রিপোর্ট পেতে দিন। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

রাজ্যপালের এই ভিডিয়ো বার্তা থেকেই বোঝা যাচ্ছে সন্দেশখালির পরিস্থিতি নিয়ে কতটা ক্ষুব্ধ তিনি। এ বিষয়ে রিপোর্টের পাশাপাশি দ্রুত ব্যবস্থা নিতেও রাজ্য সরকারকে আর্জি জানান তিনি। এই পরিস্থিতির বদল এখন কবে হয়, সে দিকেই নজর রাজ্যবাসীর।

এদিকে এই সন্দেশখালি ইস্যুকে সামনে রেখে আন্দোলনের তেজ আরও বাড়াতে চাইছে বঙ্গ বিজেপি ব্রিগেড। শনিবার দুপুরেই মিছিল করে সোজা রাজভবন চলে যান বিজেপি বিধায়কেরা। নেতৃত্বে বিধানসভা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একটাই দাবি, অনেক হয়েছে, এবার হস্তক্ষেপ করতে হবে রাজ্যপালকে। দিয়ে যান আল্টিমেটামও। এদিন রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে শুভেন্দু জানান, ‘জনগণের মানবাধিকারকে, জনগণের রোষকে কোনওভাবেই পদদলিত করতে বিজেপি দেবে না। আমাদের মহিলা মোর্চা, যুব মোর্চা পথে নামতে চলেছে। ভারতীয় জনতা পার্টির বিধায়করা সোমবার বিধানসভায় জড়ো হয়ে ১৪৪ ভাঙার জন্য সন্দেশখালি যাব।’

প্রসঙ্গত, এদিন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ একেবারে মিছিল করে প্ল্যাকার্ড হাতে রাজভবনে যেতে দেখা যায় বিজেপি বিধায়কদের। রাজভবনের সিঁড়িতে বসে চলতে থাকে বিক্ষোভ প্রদর্শন। হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা, ‘সঙ্গে আছি সন্দেশখালি’। এদিকে শুভেন্দু অধিকারীদের অভিযোগ, শাহজাহানদের খুঁজে পায় না, কিন্তু সাধারণ মানুষ যখন আন্দোলন করে, যখন গণতন্ত্রের কথা বলে তখন তাঁদের একেবারে ভোর রাতে গিয়ে গ্রেফতার করে। বিজেপির অভিযোগ, নন্দীগ্রামের কায়দায় সন্দেশখালিকে ঘিরে ফেলার চেষ্টা করছে পুলিশ। সে কারণেই আট থেকে দশ জন আইপিএস অফিসার শুধুমাত্র সন্দেশখালিতে রয়েছেন। সে কারণেই জারি ১৪৪ ধারা।

আর এই প্রসঙ্গেই শুভেন্দু অধিকারীদের দাবি, রাজ্যপাল নিজে গিয়ে দেখুন সন্দেশখালির পরিস্থিতি। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিন। সোজা কথায় সন্দেশখালিকাণ্ডে রাজ্য়পালের হস্তক্ষেপ চাইছে বিজেপি। সঙ্গে এ হুঁশিয়ারিও দেন, ১৪৪ ধারা ভেঙে বিজেপি বিধায়কেরা সন্দেশখালি যাবেন। এখানেই না থেমে একেবারে আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, আমরা রাজ্যপালকে ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়ে গেলাম। কালকের মধ্যে যদি শান্তি ফিরিয়ে না আনা হয় তাহলে সোমবার ১৪৪ ভাঙব। কত ক্ষমতা আছে আমাদের গ্রেফতার করুন। কত ক্ষমতা আছে আমরা দেখতে চাই।’ এদিনই ১৪৪ ধারার গেজেট নোটিফিকেশন রাজভবনের সামনেই পোড়াতে দেখা যায় বিজেপি বিধায়কদের। প্রসঙ্গত, সন্দেশখালি ১ এবং ২ এলাকা জুড়ে মোট ১৬ টি পঞ্চায়েত জুড়ে এই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে বলে খবর। যা নিয়েও চলছে চাপানউতোর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen + ten =