ক্ষমা চাইলেন বিনীত, মামলা খারিজ কলকাতা হাইকোর্টে

আরজি কর মামলায় স্বস্তি কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের। মামলা খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট। আরজি কর কাণ্ডে নির্যাতিতার নাম প্রকাশের জন্য কলকাতা হাইকোর্টের কাছে ক্ষমা চান কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। আদালত সূত্রে খবর, আইপিএস বিনীত গোয়েল তাঁর আইনজীবীর মাধ্যমে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিদের কাছে একটি চিঠি লেখেন। ওই চিঠিতে অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ক্ষমা ও দুঃখ প্রকাশ করে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চে চিঠিটি পাঠানো হয়। চিঠি পাওয়ার পরপরই ডিভিশন বেঞ্চের  পর্যবেক্ষণ, ক্ষমা চেয়েছেন।তাই খারিজ করা হচ্ছে মামলাকারীর আবেদন।অর্থাৎ, স্বস্তি পেলেন বিনীত গোয়েল।

এদিকে আদালত সূত্রে খবর, ডিভিশন বেঞ্চে ক্ষমা চেয়ে চিঠি লিখে বিনীত গোয়েল জানান, কোনওভাবেই ইচ্ছাকৃতভাবে অপমান করতে চাননি তিনি। তাই ক্ষমা চাইছেন। যদিও আদালত এও জানিয়েছে, কলকাতা পুলিশের মতো একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীর বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ আনা কাম্য নয়। তাই, আদালত রাজ্য পুলিশের ডিজিকে তাঁর বাহিনীর কর্তাদের আরও সতর্ক থাকার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

এদিকে মামলাকারীর আইনজীবী জয় আনন্ত দেহাদ্রাই এদিন বলেন, ‘বিভিন্ন রায়ে উল্লেখ আছে যে নিগৃহীতার নাম প্রকাশ্যে এলে শাস্তি হবে। আমরা এই চিঠি গ্রহণ করছি না।’ অন্যদিকে, বিনীত গোয়েলের আইনজীবী সন্দীপন গঙ্গোপাধ্যায়, মেনকা গুরুস্বামী মামলার গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের দাবিমামলাকারী নিজেও নিগৃহীতার নাম উল্লেখ করেছেন। তলবে এভাবে হঠাৎ নাম নেওয়ার ঘটনা দুঃখজনক এবং দুর্ভাগ্যজনক বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কাউকে অপমান করা লক্ষ্য ছিল না, জানিয়েছেন বিনীত গোয়েল। আইনজীবীরা এও উল্লেখ করেন যে, আইনে পুলিশ অফিসারকেগুড ফেথদিয়ে বিশেষ প্রোটেকশন দেওয়ার কথা উল্লেখ আছে।

দুপক্ষের বক্তব্য শোনার পরে আদালত মনে করে যে আরজি করের নির্যাতিতার নাম উল্লেখ করার ক্ষেত্রে তৎকালীন কলকাতার সিপির কোনও খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না, বরং এটি তাঁর উত্তেজনার কারণেই ঘটেছিল। তবে, এটি প্রশংসাযোগ্য নয়। তাই, মামলা নিষ্পত্তির পর, বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা এবং বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য পুলিশের ডিজিকে বাহিনীর কর্তাদের আরও সতর্ক থাকার জন্য আরও প্রশিক্ষণ বা কর্মশালা করার পরামর্শ দিয়েছে।

উল্লেখ্য, বুধবারই আরজিকর খুন ও ধর্ষণ মামলায় শিয়ালদহ আদালতে বিনীত গোয়েলকে কার্যত ক্লিনচিট দেয় সিবিআই। কেন্দ্রীয় সংস্থা জানিয়েছে বিনীত গোয়েলের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এদিকে, তিলোত্তমার পরিবারের অভিযোগ, সিবিআইএর তদন্তকারী আধিকারিক বিনীত গোয়েলের ব্যাচমেট হওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত করা হচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, গত বছর কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এক চিকিৎসককে নৃশংস ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর কলকাতার তৎকালীন পুলিশ কমিশনার গোয়েল সংবাদমাধ্যমের সামনে ব্রিফিং করার সময় ভুল করে নির্যাতিতার নাম বলে ফেলেন। এরপর সমাজের বিভিন্ন অংশ তৎকালীন পুলিশ কমিশনারের এই কাজের তীব্র নিন্দা করে। সেই অনুযায়ী বিনীত গোয়েলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা হয় এবং কলকাতা হাইকোর্ট আইপিএস অফিসারের কাছ থেকে জবাব চেয়ে পাঠায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 + 7 =