কেরলের সঙ্গে নাকি অনেক মিল আছে এই বাংলার! এমনকী চিন্তাভাবনাও নাকি ভীষণ এক ধরনের। অথচ সেই কেরলের ডিশ খুঁজে পাওয়া দায় হয় এই কলকাতায়। এটা নিয়ে অনেককেই আফশোস করতে দেখাও গেছে কখনও, কখনও। তবে এবার সেই আফশোস বা কেরলের খাবারের জন্য হা-পিত্তেশ করার দিন কাটলো। ইএমবাইপাসের ওপর ‘বিভান্তা’ তাদের রেস্তোরাঁ, মিন্ট-এ কেরালার খাঁটি খাবার নিয়ে আসলো । কেরালা উপকূলীয় এই খাদ্য উৎসব চলবে ১২ থেকে ২২ জুন ২০২৫ পর্যন্ত । এর জন্য মাথা পিছু খরচ ১৬৯৯ টাকা এবং কর। আর এই খাবার মিলবে শুধুমাত্র ডিনারে অর্থাৎ নৈশভোজে। সময় সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত।
এই প্রসঙ্গে বতেই হয়, কেরালার রন্ধনপ্রণালীর রয়েছে এক সমৃদ্ধ ইতিহাস, যার মধ্যে স্পষ্ট এক প্রভাব পড়েছে তাদের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির। ছাপ ফেলে গেছে তাদের অনন্য ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যও। কেরলের খাবারে সূক্ষ্ম, সুগন্ধ এবং নারকেল মিশ্রিত স্বাদ তাদের খাবারকে পৌঁছে দিয়েছে এক ভিন্ন মাত্রায়। আর তার পিছনে রয়েছে কেরালার রন্ধনপ্রণালী অসাধারণ সব বৈচিত্র্য। কেরলের প্রতিটি খাবার এর বৈচিত্র্যময় ভূগোল এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে প্রতিফলিত করে। কেরলের যে সব উল্লেখযোগ্য খাবার রয়েছে তা মেলে মালাবার, সেন্ট্রাল ট্রাভাঙ্কোর এবং আলেপ্পি (আলাপ্পুঝা) এর মতো অঞ্চলে। কারণ, এর ভৌগোলিক অবস্থান অত্যন্ত প্রভাব ফেলে। এখানে একটা কথা না বললেই নয়, উপকূলীয় অঞ্চলগুলি তাদের তাজা সামুদ্রিক খাবারের জন্য পরিচিত। অন্যদিকে কেরলের অভ্যন্তরীণ অঞ্চলগুলি বিখ্যাত তাদের নানা ধরনের নিরামিষ এবং আমিষ খাবারের জন্য। আর এই সব ডিশের বৈশিষ্ট্য হল এদের মধ্য়ে খুব বেশি রকম ব্যবহার হতে দেখা যায় কালো মরিচ, এলাচ এবং লবঙ্গের মতো মশলা। আর সঙ্গে নারকেল তো থাকবেই।
এই প্রসঙ্গে কোচিনের তাজ মালাবার রিসোর্ট অ্যান্ড স্পার শেফ ধনিয়া নায়ার এবং শাজি এভি, কলকাতায় উপস্থিত তাঁদের রন্ধনকার্যের অপূর্ব দক্ষতা নিয়ে আর অতিথিদের ঈশ্বরের নিজস্ব দেশের সবচেয়ে খাঁটি স্বাদ পরিবেশন করার অভিপ্রায়ে। আর এই রন্ধন প্রণালীর মধ্যে ছোঁয়া মেলে প্রাচীন রান্নার পদ্ধতির। আর উপাদান হিসেবে তাঁরা ব্যবহার করছেন কেরল থেকে প্রাপ্ত সব উপাদান দিয়েই। যেখানে থাকবে ঐতিহ্যের প্রতি তাঁদের নিষ্ঠা ও সত্যতা।
অতিথিরা কেরলের খাবারের স্বাদ পাবেন কোঝি পরিচাথু (চিকেন), নাদান চেম্মিন কারি (চিংড়ি), মাটন কোকোনাট ফ্রাই, ফিশ মোইলি, অঙ্গমালি মাঙ্গা কারি, আভিয়াল, পাইন্যাপেল পুলিসারি, কাল্লাপ্পাম, কেরালা মাত্তা রাইস , পালদা পায়াসাম, ক্যালিকট হালওয়ার মতো সুস্বাদু সব খাবারের মধ্যে।
এই প্রসঙ্গে শেফ ধনিয়া নায়ার জানান, ‘কেরালার খাবার হল টক, মসলাদার এবং সমৃদ্ধ স্বাদের এক সুরেলা মিশ্রণ, যা স্বাদের দিক থেকে সত্যিই এক অনন্য মাত্রা দেয়। এ কলকাতার মানুষের জন্য কেরালার ঐতিহ্যবাহী স্বাদের অভিজ্ঞতা এবং স্বাদ গ্রহণের এটি একটি দুর্দান্ত সুযোগ।’ এর পাশাপাশি শেফ শাজি এভি জানান, ‘আমরা আনন্দের শহরে কেরালার খাঁটি স্বাদ আনতে পেরে আনন্দিত।’