ন্যাড়া বেলতলায় ক’বার যায় বলে কটাক্ষ করে প্রশাসনকে চিঠি  পশ্চিমবঙ্গ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী, চাকরিজীবী ও চাকরিহারা ঐক্য মঞ্চের

ন্যাড়া বেলতলায় ক’বার যায় বলে কটাক্ষ করে প্রশাসনকে চিঠি  পশ্চিমবঙ্গ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী, চাকরিজীবী ও চাকরিহারা ঐক্য মঞ্চের প্রতিনিধিরা। পশ্চিমবঙ্গ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী, চাকরিজীবী ও চাকরিহারা ঐক্য মঞ্চের পক্ষ থেকে গত ২১ শে এপ্রিল নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া  হয়েছিল। কিন্তু তার ঠিক আগেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঐক্য মঞ্চের প্রতিনিধিদের হাওড়ার শিবপুর থানা, লালবাজার ও ভবানী ভবনে ডাকা হয় এবং সেখানে ১৬ ই এপ্রিল, ১৮ই এপ্রিল প্রশাসনের উচ্চ আধিকারিকদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠকও হয়। তবে এই  বৈঠকে কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি। ফলে  পশ্চিমবঙ্গ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী, চাকরিজীবী ও চাকরিহারা ঐক্য মঞ্চ নবান্ন অভিযানে অনড় থাকেন। এদিকে ওই বৈঠকে প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়, নবান্নে মুখ্যসচিবের সাথে তাঁদের প্রতিনিধি দলের বৈঠকের বন্দোবস্ত করে সরকার সমস্যার সমাধানের জন্য উদ্যোগী হবে।  এই প্রস্তাবে রাজি হয়নি ঐক্য মঞ্চ। পরবর্তীতে প্রশাসনের অনুরোধে তাঁরা  ১৯ এপ্রিল প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে জানায় সাময়িকভাবে তাঁরা নবান্ন অভিযান স্থগিত রাখছে এবং নবান্নে মুখ্যসচিবের সাথে বৈঠকে বসতে রাজি। এরপর হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের তরফ থেকে ১২ জন প্রতিনিধির নাম এবং তাঁদের সমস্যার কথা জানতে চেয়ে লিপিবদ্ধ করা হয়।  পরবর্তীতে ফের লালবাজারে ১৬ মে একটি বৈঠক হয় সেখানে পুনরায় সমস্ত তথ্য নেওয়া হয় এবং আবারো আশ্বস্ত করা হয় মুখ্যসচিবের সাথে বৈঠক করে সমস্যার সমাধানে রাজ্য সরকার উদ্যোগী হবেন কিন্তু এরপরও কেটে গেছে আরও ১৫ দিন। এদিকে চাকরিজীবী ও চাকরিহারা ঐক্য মঞ্চের প্রতিনিধিরা জানাচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হয়নি। তাই এবার প্রশাসনকে বাধ্য হয়ে চিঠি পাঠানো হয় ঐক্য মঞ্চের তরফ থেকে, যেখানে বলা হয়,’ন্যাড়া বেলতলায় একবার যায় কিন্তু আমরা দু-দুবার।’আমরা ভেবেছিলাম প্রশাসনের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হবে কিন্তু এবারেও সেই একই প্রতারণা করলেন। স্বয়ং ভগবানের কাছেও প্রার্থনা করলে তিনিও সাড়া দিতেন কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কোনোভাবেই সাড়া দিচ্ছেননা বলে চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে। এছাড়াও চিঠিতে এও হুঙ্কার দেওয়া হয়েছে ‘আগামী কর্মসূচিতে পুলিশের গুলি খেতে প্রস্তুত এবং দুর্নীতি পরায়ণ সরকারের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে যদি প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়,তাতেও রাজি।’
এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী, চাকরিজীবী ও চাকরিহারা ঐক্য মঞ্চের আহ্বায়ক আশিস খামরই জানান, “ধর্মতলায় ধর্না মঞ্চেগুলোর দিনসংখ্যা দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে। কারও ১০০০, আবার কেউ ধর্না দিচ্ছেন  ৮০০ দিনেরও বেশি। আমরা চাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বসে সুষ্ঠু সমাধান। কিন্তু,মুখ্যমন্ত্রী কোনওভাবেই আমাদের সমস্যার কথা কর্ণপাত করছেন না, যা অত্যন্ত দুঃখজনক,অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রী আমাদের সাথে সাক্ষাতের মাধ্যমে সমাধান করুক।’
মঞ্চের অন্যতম আহ্বায়ক শুভদীপ ভৌমিক জানান, ‘যতবারই ভাবি দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারকে আমরা একটা সুযোগ দিয়ে সমাধানের মাধ্যমে দুর্নীতি করা থেকে বিরত রাখবো এবং প্রত্যেক বঞ্চিত যোগ্যরা ন্যায়বিচার পাবে কিন্তু, ততবারই সরকারের মনোভাব এবং কাজে শুধুই দুর্নীতি প্রকাশ পাচ্ছে। তাই এবার দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে প্রাণ বিসর্জন দিতে রাজি আছি।’ এর পাশাপাশি ঐক্য মঞ্চের আরেক আহ্বায়ক দেবাশিস বিশ্বাস জানান, ‘আন্দোলনের আগে বহুবার সরকারকে বলছি আপনারা সমস্যার সমাধান করুন কিন্তু সরকার সমাধান করতে চাইছে না। তাই আগামীর আন্দোলনে যদি সরকার বলে আমরা সমাধান করবো,আপনারা আন্দোলন থেকে বিরত থাকুন, তবে সেটা আদতে প্রতারণা, যেটা আমরা এখন বুঝেছি। কারণ এতোদিনেও সরকারের সমাধানের কোনো সদিচ্ছা দেখা যায়নি,এবারে সর্বশক্তি দিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়বো আমরা।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen − two =