কিছুদিন আগেই দেখা গিয়েছিল ফাটল! এরপরেই তড়িঘড়ি চিংড়িহাটা মোড়ের উড়ালপুল পরিদর্শন করেন বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি রাজ্যের সেতু পরামর্শদাতা কমিটি প্রস্তাব দিয়েছে, এই উড়ালপুলটিকে অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য। প্রসঙ্গত, বাম আমলে তৈরি হয়েছিল চিংড়িহাটা উড়ালপুল। এর বয়সও খুব বেশি নয়। সেক্ষেত্রে কেন এত অল্প বয়সে উড়ালপুলটির এই দশা তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। এই প্রসঙ্গে উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান এবং সেতু ও উড়ালপুল বিশেষজ্ঞ অমিতাভ ঘোষাল জানান, ‘উড়ালপুলে কিছু চিহ্ন সামনে এসেছে। আপাতত ফ্লাইওভারটি বন্ধ রাখার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে যাতে তা আরও ভালো করে পর্যবেক্ষণ করা যায় এবং আদৌ এই উড়ালপুলটি যানচলাচলের যোগ্য কিনা তা পরীক্ষা করা সম্ভব হয়।’
পাশাপাশি তিনি এও জানান, যদি উড়ালপুলটিকে বিপদমুক্ত করা এবং শক্তিবৃদ্ধির জন্য যে কাজটি করা হচ্ছে তা সফল না হয় সেক্ষেত্রে তা পুরোপুরি ভেঙে ফেলতে হবে এবং নতুন উড়ালপুল তৈরি করতে হবে। অথবা একটির ‘সুপারস্ট্রাকচার’ সম্পূর্ণ বদলে ফেলতে হবে। এই প্রক্রিয়া সম্ভব ‘সাব স্ট্রাকচার’-গুলি যদি সঠিক অবস্থায় থাকে। গত মাসেই এই উড়ালপুলে ফাটল নজরে আসে। গত ২৭ জুন এই ফ্লাইওভারটি পরিদর্শন করে বিশেষজ্ঞ কমিটি এবং কেএমডিএ ইঞ্জিনিয়ারদের বলা হয় উড়ালপুলটির নজরে আসা ফাটলের উপর নিয়মিত নজরদারি চালাতে।
উল্লেখ্য, বামফ্রন্ট জামানায় মেগাসিটি প্রকল্পে তৈরি করা হয়েছিল চিংড়িহাটা মোড় থেকে সল্টলেক সেক্টর ফাইভগামী ৬০০ মিটার দীর্ঘ এই উড়ালপুল। এখানের কেএমডি-এর একটি সূত্রের দাবি, উড়ালপুল নির্মাণের সময় ত্রুটি থাকতে পারে। ২০১৯ সালে একটি কনসালট্যান্ট সংস্থার তরফে জানানো হয়, উড়ালপুলটির সুপার এবং সাব স্ট্রাকচারে বেশ কিছু ত্রুটি রয়েছে। সেই সময় এই উড়ালপুলের উপর দিয়ে ভারী যানচলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল। গাড়িগুলির গতিও সেই সময় নিয়ন্ত্রণ করে চালাতে বলা হয় ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার গতিবেগে। যদিও এরপরেও সেতুটির শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি হয়নি। তৎকালীন সময়ে সেতু উপদেষ্টা কমিটি এই উড়ালপুলটিকে ভেঙে ফেলার পরামর্শও দেয়। যদিও পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে স্বল্প সময়ের জন্য মেরামত করে এই উড়ালপুলটি আরও পাঁচ বছর ব্যবহার করা সম্ভব হবে। তবে ফের ফাটল নজরে আসায় উঠছে একাধিক প্রশ্ন।