‘পশ্চিমবঙ্গে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ খাত উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখেছে। রাজ্য সরকার খাতটিকে উৎসাহিত করতে এবং বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। রাজ্যে উন্নত রোপণ সামগ্রী, উচ্চ ফলনশীল বীজ উৎপাদন, মডেল নার্সারি স্থাপন, জৈব উদ্যানপালনের প্রচার, ফসল পরবর্তী ব্যবস্থাপনা, ফল ও সবজির প্রক্রিয়াকরণ, মানসম্পন্ন প্যাকেজিং, কোল্ড চেইন অবকাঠামো উন্নয়ন, সংকটময় অঞ্চলে বৃষ্টির জল সংরক্ষণ, প্রযুক্তি উন্নয়ন এবং সুরক্ষিত চাষাবাদ প্রসারে কাজ করা হচ্ছে।’ এসসিওচ্যাম আয়োজিত কৃষি, পশুপালন এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ বৃদ্ধিমূলক সভায় এমনটাই জানালেন খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প ও উদ্যানপালন বিভাগের মন্ত্রী অরূপ রায়।
তিনি আরও জানান, ‘অবিভিন্ন পশু খাদ্য, মুরগির খাদ্য এবং মাছের খাদ্যের চাহিদা মেটাতে আগামী তিন বছরে মেইজ চাষের ক্ষেত্রফল ৬০,০০০ হেক্টর বাড়ানো হবে। সরকার, বেসরকারি খাত, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সিভিল সোসাইটির মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা একে অপরের শক্তি কাজে লাগিয়ে সম্মিলিতভাবে সামনে আসা চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবেলা করতে পারব। কৃষিতে নিয়োজিত কর্মীদের ৭০ শতাংশই নারী। তাই নারীদের কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে উৎসাহিত করা মহিলাদের ক্ষমতায়নের এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’
এর পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের সম্ভাবনা তুলে ধরে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প ও উদ্যানপালন বিভাগের সচিব স্মরকী মহাপাত্র, আইএএস জানান, ‘পশ্চিমবঙ্গ অনেক সবজি ও ফলের শীর্ষ উৎপাদক, এখানে প্রায় ১৬.৩ মিলিয়ন টন সবজি উৎপাদিত হয় যেখানে স্থানীয় খরচ প্রায় ৯.৫ মিলিয়ন টন। ফল উৎপাদন প্রায় ৪ মিলিয়ন টন এবং খরচ ৩–৩.৫ মিলিয়ন টনের মধ্যে। এই উদ্বৃত্ত পণ্য শীতল চেইন লজিস্টিক্স ও রপ্তানি উন্নয়নে বিনিয়োগের মাধ্যমে অন্য রাজ্য এবং দেশগুলোতে রফতানি করা যেতে পারে। সরকার কলা, আনারস, ব্লুবেরি এবং আদা সহ বিভিন্ন ফসলের টিস্যু কালচারের জন্য ব্যাপক সহায়তা প্রদান করছে।’
এর পাশাপাশি তিনি এও জানান, ‘আমরা একমাত্র রাজ্য যেখানে হিমালয় এবং সমুদ্র তট রয়েছে, যা ফল ও সবজি উৎপাদনের জন্য আদর্শ। সরকার এই খাতের উন্নয়নে কঠোর পরিশ্রম করছে। মূল্য সংযোজন ও খামার থেকে বাজার পর্যন্ত বিনিয়োগের অনেক সুযোগ রয়েছে। রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী ঔষধি গাছপালার সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে এবং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় এর ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। ২০২৪–২৫ অর্থবছরে রাজ্যে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ খাতে ২৪,২১৩টি ইউনিট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা ছোট সংখ্যা নয়। সরকার, কৃষক উৎপাদন সংগঠন (এফপিও), কৃষক ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে অংশীদারিত্ব এই খাতে আগ্রহ সৃষ্টি এবং এর পূর্ণ সম্ভাবনা বিকাশে অপরিহার্য।’