টানা বৃষ্টির জেরে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গায় তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। একাধিক নদী ছাপিয়ে জল ঢুকছে গ্রামের পর গ্রামে। গড়বেতা, ঘাটাল, চন্দ্রেকানা-সহ একাধিক এলাকা প্লাবিত। এদিকে জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছেন তুলসী রুইদাস নামে এক ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটেছে চন্দ্রকোনার পলাশচাপড়ি এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ফেরার সময় রাস্তা পেরোতে গিয়ে বন্যার জলে তলিয়ে যান তুলসী ও তাঁর স্ত্রী। স্থানীয় বাসিন্দারা স্ত্রীকে উদ্ধার করতে পারলেও তুলসীকে উদ্ধার করতে পারেননি। তিনি জলের তোড়ে ভেসে যান। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।
ভারী বৃষ্টি আর জলাধার থেকে ছাড়া জলের জেরে বিপর্যস্ত একাধিক জেলার জনজীবন। পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার একাংশ জলমগ্ন। বন্যা পরিস্থিতি হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা, চন্দ্রকোনা, ঘাটাল-সহ একাধিক এলাকায়। বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে কয়েক হাজার গ্রাম। একাধিক রাজ্য সড়কের উপর দিয়ে জল বইছে। বাঁকুড়ার জয়রামবাটিতেও কিছুটা এলাকায় প্লাবিত হয়েছে। টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে জলমগ্ন পুরুলিয়া শহরের একাধিক জায়গা। একনাগাড়ে বৃষ্টির জেরে ঝাড়গ্রামের ডুলুং নদীর জল বইছে বিপদ সীমার উপর দিয়ে। যার ফলে ঝাড়গ্রাম সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে জামবনি ব্লকের। যার ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন ৩০ থেকে ৩৫টি গ্রামের মানুষ।
এদিকে, শুক্রবার সকাল থেকে ফের দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৫৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। জল ছাড়ার জন্য দামোদর নিম্ন উপত্যকায় বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। যদিও, এর জন্য ঝাড়খণ্ডের তেনুঘাট বাঁধ কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। শুক্রবার দুর্গাপুর ব্যারাজ পরিদর্শন করতে আসেন মন্ত্রী। যখন তিনি ব্যারাজ পরিদর্শন করছিলেন সেই সময় লকগেট দিয়ে প্রবল স্রোতে জল বের হচ্ছে। মানস ভুঁইয়া বলেন , ‘তেনুঘাট থেকে জল ছাড়ার ব্যপারটা কিছুতেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছেন। কিন্তু তেনুঘাটকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। আমরা চাই না রাজ্যে বন্যা হোক। মানুষ বিপদে পড়ুক। এর মধ্যেই দক্ষিবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’