পুরুষ কি না তার পরিচয় দিতে গিয়েই কী আত্মহত্য়া, প্রশ্ন স্বপ্নদীপের বন্ধুর পোস্টে

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপের কুণ্ডুর আত্মহত্যার ঘটনায় স্তম্ভিত কলকাতা-সহ গোটা রাজ্য।  ঘটনার তদন্তে নেমেছে যাদবপুর থানা এবং কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দ বিভাগ। ইতিমধ্যেই গ্রেফতারও করা হয়েছে প্রাক্তন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া সৌরভ চৌধুরীকে। শুক্রবার স্বপ্নদীপের বাবা রমাপ্রসাদ কুণ্ডুর খুন এবং সম্মিলিত ষড়যন্ত্রের ধারায় মামলা রুজু করেন। তার ভিত্তিতেই তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তের জন্য শুক্রবার যাদবপুরের হস্টেলের কয়েকজন পড়ুয়াকে ডেকে পাঠান হয়, শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদে অসঙ্গতি মেলায় অঙ্কে স্নাতকোত্তরের প্রাক্তনী সৌরভকে প্রথমে আটক এবং রাতে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশি র‍্যাডারে রয়েছে হস্টেলের আরও কয়েকজন আবাসিক। স্বপ্নদীপের আত্মহত্যার নেপথ্যে কাদের কাদের ভূমিকা রয়েছে, তাঁর সঙ্গে কী আচরণ করা হয়েছিল, কেন সে অসংলগ্ন আচরণ করছিল তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা।

ঘটনার পর বেশ কয়েকটি ছাত্র ইউনিয়নের অভিযোগ, প্রতিটি ঘটনার তদন্ত একটি নির্দিষ্ট গতিতে শুরু হলেও  শেষ পর্যন্ত কোথায় হারিয়ে তা কেউ জানে না। এই ঘটনার পর বেশ কয়েকজন ছাত্র তথ্য দিলেও তা ভাসা ভাসা। অনেকেই ফেসবুকেও লিখছেন। কিন্তু সামনে আসতে ভয় পাচ্ছেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ে পা রাখার পর থেকেই বাবা-মাকে বারে বারে জানিয়েছিল সে এখানে থাকতে পারছে না। তাঁকে যেন বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু এমন বলার কারণ কী তারই খোঁজে তদন্তকারীরা।

এদিকে স্বপ্নদীপের দু-একজন সহপাঠী, যাঁরা মাত্র কয়েকদিন ওঁর সঙ্গে মিশেছিলেন, ক্লাস করেছিলেন তাঁদের দাবি, স্বপ্নদ্বীপ বেশ লাজুক প্রকৃতির ছিলেন। স্বপ্নদীপের জেঠু জগদীশ কুন্ডুও কথায় কথায় এমনই ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, ‘স্বপ্নদ্বীপ গ্রাম্য সরল কথা বলত। ভীতু প্রকৃতির। গ্রাম থেকে শহরে এসে দু’দিনেই সকলের সঙ্গে মিশে যাবে, সে রকম ছিল না। তার ওপর ভয় চেপে বসেছিল।’

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সায়ন সরকার সোশ্যাল মাধ্যমে পোস্ট করেছেন স্বপ্নদীপের মৃত্যুর কারণ নিয়ে। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, স্বপ্নদীপের একই বর্ষের কেমিস্ট্রির এক ছাত্রের সঙ্গে তাঁর কথা হয়। হোয়াটস অ্যাপে চ্যাটও হয়। তিনি জেনেছিলেন স্বপ্নদীপকে যৌন হেনস্থা করা হয়েছিল সেই রাতে। সে পুরুষ কিনা তা পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বাধ্য করা করেছিল সিনিয়ার দাদারা। যার মধ্যে রয়েছেন গ্রেফতার হওয়া প্রাক্তনী সৌরভ। এমনকি সৌরভ চৌধুরীর মদতই সবথেকে বেশি ছিল বলে দাবি। স্বপ্নদীপকে ‘দাদা’রা খোলা ছাদে নিয়ে গিয়ে এমন কিছু করতে বলেছিলেন, তা তিনি মেনে নিতে পারেননি। এরপর তাঁর মাথা আর কাজ করেনি। উদ্ভ্রান্তের মতো আত্মহননের পথ বেছে নেন বলেই ধারনা সায়নের।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen + eleven =