স্বপ্নদীপের মৃত্যুর পর যখন উত্তর খোঁজা হচ্ছে সেই সময় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর এক ছাত্রের বিস্ফোরক ফেসবুক পোস্ট ঘিরে শোরগোল। কারণ,অর্পণ মাঝি নামক যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের এক ছাত্র র্যাগিং নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন। চুলের বিশেষ ছাঁটের দাবি, দিন প্রতিদিন ‘ইন্ট্রো’দিতে বলা সহ কিছু সিনিয়রের ‘দাদাগিরি’ প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন তিনি। সেখানে অর্পণ যা লিখেছেন,অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া একটি পরিবার থেকে এসেছেন তিনি। বড় হয়ে ওঠা আসানসোলে। তাই যাদবপুরে ভর্তির পর তিনি হস্টেলের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু,প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরুর পর দুই তিন দিনের হস্টেল যাপন তাঁর কাছে বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র অর্পণের ফেসবুক পোস্ট থেকে সামনে এসেছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য়। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন,’সমাজের প্রতিটি স্তরে ক্ষমতা প্রদর্শন আছে। কিন্তু যাদবপুর মেইন হস্টেলের কিছু দাদাও যে এই একই কাজ করবে তা আমার কল্পনার অতীত। মাথায় একটি স্পেসিফিক ছাঁটের চুল কাটতে বলা, সন্ধ্যে ৬ টার মধ্যে হস্টেলে ঢুকতেই হবে, সিনিয়রদের ক্রমাগত ফাইফরমাশ খাটা, সারারাত জাগিয়ে রেখে ইন্ট্রো নেওয়া। এগুলো ওই তিন রাত আমার সাথে চলছে এবং আমি ভীত।’ একইসঙ্গে তিনি এও জানান,’মেইন হস্টেল নিয়ে আমি অনেক গল্প শুনেছি। বন্যার্তদের সাহায্যে গল্প, কোয়ারেন্টাইনের সময় অসহায় মানুষের পাশে থাকা। যাদবপুর থানার নানা দাদাগিরির বিরুদ্ধে সারাদিন সারারাতের ঘেরাও। আমি বিশ্বাস করি মেইন হস্টেলের বেশিরভাগ দাদাই এই লড়াকু ঐতিহ্য বহন করে। কিন্তু কিছু জনের জন্য আমি আমার সহপাঠীকে হারালাম। সচেতন সংবেদনশীল সহমর্মী দাদাদের কাছে আমার আহ্বান এই রব়্যাগিং-এর মত নগ্ন ক্ষমতা প্রদর্শন কে বিচ্ছিন্ন করার সংগ্রামে পথ দেখাতে যেভাবে অন্য সংকটে তারা দেখিয়েছি।’
এরই পাশাপাশি অর্পণ এও জানান,’হস্টেলের কিছু নিয়ম রয়েছে। প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের ছোট ছোট চুল করে প্রবেশ করতে হবে, হাফপ্যান্ট পরা যাবে না, ফুল প্যান্ট পরে থাকতে হবে বছরভর। দাড়ি গোঁফ রাখা যাবে না।’ তবে এই ঘটনায় গুটিকয়েক সিনিয়েরর দিকে আঙুল তুললেও কোনও অভিযোগ জানাতে নারাজ অর্পণ। তিনি জানান, আপাতত হস্টেলে থাকছেন না তিনি। এক সিনিয়রের ফ্ল্যাটেই আশ্রয় নিয়েছেন।