‘কেন বারবার হিন্দুদেরই সহ্যশক্তির পরীক্ষা দিতে হবে?’, ঠিক এই ভাষাতেই ‘আদিপুরুষ’ সিনেমার নির্মাতাদের এবার কঠোর ভর্ৎসনা করতে দেখা গেল এলাহাবাদ হাইকোর্টকে। একইসঙ্গে বিচারপতি রাজেশ সিং চৌহান এবং শ্রীপ্রকাশ সিংয়ের বেঞ্চ এও জানায়, ‘ঈশ্বরকে ধন্যবাদ যে তাঁরা আইনশৃঙ্খলা হাতে তুলে নেয়নি।‘
প্রসঙ্গত, রামচন্দ্র এবং হনুমান, রামায়ণের এই দুই প্রধান চরিত্র ভারতে দেবতা হিসেবে পূজিত হন। তাঁদের সাক্ষাৎ ভগবান বলে বিশ্বাস করেন হিন্দুরা। ‘আদিপুরুষ’ সিনেমায় ধর্মীয় সেই চরিত্র দুটিকে আপত্তিকরভাবে তুলে ধরা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই মামলায় মঙ্গলবার এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রশ্ন, ‘হিন্দুদের সহনশীলতার পরীক্ষা নিতে চেয়েছেন কেন সিনেমা নির্মাতারা?’ বিচারপতি রাজেশ সিং চৌহান এবং শ্রীপ্রকাশ সিংয়ের বেঞ্চ আদিপুরুষ সম্পর্কে এও জানায়, ‘ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের এ ব্যাপারে সার্টিফিকেট দেওয়ার আগে কিছু করা উচিত ছিল।’ আদালতের কথায়, ‘অগর হাম লোগ ইসপর ভি আঁখ বন্দ কর লে কিঁউকি ইয়ে কহা জাতা হ্যায় কি ইয়ে ধর্ম কে লোগ বড়ে সহিষ্ণু হ্যায় তো ক্যায়া উসকা টেস্ট লিয়া জায়েগা?’ এরই রেশ ধরে বেঞ্চ এও জানায়, ‘আমরা খবরে দেখেছি, কিছু লোক সিনেমা হলে গিয়ে জোর করে ছবির প্রদর্শন বন্ধ করেছে। তারা এটা না করে অন্য কিছুও করতে পারত।‘ আর তা যে করেনি, তার জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়েছে বেঞ্চ।
এখানে বলে রাখা শ্রেয়, দক্ষিণী নায়ক প্রভাস, সইফ আলি খান এবং কৃতী সানন অভিনীত ‘আদিপুরুষ’ ছবির কিছু সংলাপ ও প্রদর্শন বন্ধের আর্জি জানিয়ে ২টি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল উচ্চ আদালতে। আর এই প্রসঙ্গেই আদালত এও মনে করে, ধর্মীয় আখ্যান যা অত্যন্ত সংবেদনশীল তাকে ছোঁয়া কিংবা তার উপর প্রভাব খাটানো ঠিক নয়। আর সেই কারণেই আবেদনটি অত্যন্ত যুক্তিপূর্ণ বলে মনে করে আদালত।
এই প্রসঙ্গে বেঞ্চ এ প্রশ্নও তোলে, ‘আপনারা কি দেশের মানুষ ও যুব সমাজকে নির্বোধ মনে করেন? আপনারা রাম, লক্ষ্মণ, হনুমান, রাবণ ও লঙ্কা দেখিয়েও দাবি করেছেন এটা রামায়ণ নয়?‘ শুনানির সময় দেশের ডেপুটি সলিসিটর জেনারেলের আবেদনের বিরোধিতা নিয়েও প্রশ্ন তোলে আদালত। প্রাথমিকভাবে যখন দেখা যাচ্ছে, এই সিনেমায় আপত্তিকর দৃশ্য এবং সংলাপ আছে তখন তিনি কী করে এর সপক্ষে যুক্তির অবতারণা করেন, তাও জানতে চায় বিচারপতি রাজেশ সিং চৌহান এবং শ্রীপ্রকাশ সিংয়ের বেঞ্চ।