কলকাতা শহরের পরতে পরতে জড়িয়ে নস্ট্যালজিয়া। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল থেকে শুরু করে কালীঘাট মন্দির, সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল থেকে টিপু সুলতান মসজিদ, এমন অনেক কিছুই আছে এই নস্ট্যালজিয়ার তালিকায়! রয়েছে যাত্রীবাহী বেসরকারি বাসও।
রবিবার দেখতে দেখতে ১০০ বছর পার করল ৫৬ নম্বরবাস রুট। আরও আশ্চর্যের কথা, এই বাস রুটেই এখনও চলে একটি কাঠের বাস। যা একটা সময়ে ছিল কলকাতার ঐতিহ্য। তবে সময়ের আবর্তনে শহরের রাস্তা থেকে ধীরে ধীরে উঠে গেছে সেই কাঠের বাস। ইস্পাতের বাসের আবির্ভাব হলে কোণঠাসা হতে হতে ক্রমশ আজ বিলুপ্ত প্রায় হয়ে গিয়েছে কাঠের বাস। শুধু ৫৬ নম্বর রুট-ই নয়, ৫২ নম্বর রুট কিছুদিন আগেই ১০০ বছর পার করেছে।
হাওড়ার বালি থেকে যাত্রী নিয়ে এই রুটে বাসের যাত্রা শুরু হয় প্রায় একশো বছর আগে, ১৯২৪ সালে। কোনও সিন্ডিকেট থেকে নয়, এই রুটে গণ পরিবহণের উদ্দেশ্যে ৫৬ নম্বর রুট চালু করে তৎকালীন ব্রিটিশ শাসিত সরকার। যাত্রীদের প্রয়োজন অনুযায়ী বালি থেকে হাওড়া ছাড়িয়ে এই রুট বাড়তে থাকে একটু একটু করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ৫৬ নম্বর রুটের দৈর্ঘ্য বাড়লেও গণ পরিবহণের অন্যান্য আরও বিকল্প বাস ট্যাক্সি, অনলাইন ক্যাব চলে আসায় এই রুটের বাসের সংখ্যা এখন মাত্র ১৮ তে এসে দাঁড়িয়েছে।
কিন্তু কোথায় গেল সেই সব কাঠের বাস? ১৯৯৫ সাল থেকেই একটু একটু করে বসে যেতে শুরু করে রাজ্যের কাঠের তৈরি বাসগুলি। এর পিছনে প্রধান কারণ ছিল জ্বালানির খরচ। কাঠের বাসের ওজন বেশি হওয়ায় বাসের জ্বালানি খরচ ছিল প্রচুর। আর আজকের যুগে জ্বালানি তেলের যা দাম, তাতে এই ধরনের বাস চালানোর কথা কেউ ভাবতেও পারেন না। তবুও শেষ বাস হিসেবে নিজের ইতিহাসকে আঁকড়ে ধরে বসে আছে ৫৬ নম্বর রুটের এই বাস। যা শনিবার রাস্তায় নেমে আবেগে ভাসালো কলকাতা আর হাওড়ার বহু মানুষকেই।