প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে গেলে আমরা ফেলে রাখার পক্ষপাতী নই। সঙ্গে সঙ্গে তা মানুষের কাজে লাগিয়ে দিই। আমরা গেরুয়া করার প্রকল্প করি না। এই রং ত্যাগের প্রতীক, এই রং নিয়ে ছেলে খেলা করা যায় না।’ বৃহস্পতিবার রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নে একগুছ প্রকল্পের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করার মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক এই ভাষাতেই বিঁধলেন বিজেপিকে। এদিন নবান্ন সভাঘর থেকে স্বাস্থ্য দফতরের প্রায় ২০০ কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসও করতে দেখা গেল তাঁকে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী ১০.৪ কোটি অর্থ ব্যয়ে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পিপিপি মডেলের ওয়ান দশমিক ৫২৩লা এম আর আই সেন্টার উদ্বোধন করেন। ৩. ৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে ইসলামপুর সাব ডিভিশন হাসপাতালে সিটি স্ক্যান মেশিন বসানো হয়। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে টার্সিয়ালি ক্যান্সার কেয়ার সেন্টারের ১২০ শয্যা বিশিষ্ট দুটি বিল্ডিং তৈরি হয়েছে ৫১ কোটি টাকা খরচ করে। এদিন এই প্রকল্পের উদ্বোধনও করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের ১১ টি হাসপাতালে ২৪ সজ্জার হাইব্রিড সিসিইউ তৈরি করা হয়েছে, প্রায় ১২ কোটি টাকা খরচ করে হাসপাতালে কুড়ি শয্যার বাড়তি ওয়ার্ড তৈরি করা হয়েছে। তিনটি হাসপাতালে ব্লাড কম্পোনেন্ট সেপারেশন ইউনিট তৈরি হয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে। সিউড়ি ও কৃষ্ণনগর হাসপাতালে তৈরি হয়েছে জনস্বাস্থ্য পরীক্ষা কেন্দ্র। এদিন সব ক’টি প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এছাড়াও নবান্ন সভাঘর থেকে এদিন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ইন্টিগ্রেটেড ক্লিনিক্যাল বিল্ডিং-এর সংস্কার, পশ্চিম বর্ধমানের অকালপুরে আরবান কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে নির্মাণ, দার্জিলিংয়ে সরকারি হাসপাতালের সংস্কার এবং বীরভূমের রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে রাত্রি নিবাস নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্থ স্থাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এর জন্য রাজ্য সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ৯ কোটি টাকা। এরই পাশাপাশি এদিনের এই মঞ্চ থেকে বাঁকুড়া জেলার সোনামুখী এলাকার জন্য নতুন অগ্নি নির্বাপন কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়। এছাড়াও মুর্শিদাবাদ জেলার দ্বারকা নদীর ওপর গ্রামের দুই – লেন বিশিষ্ট নতুন সেতুর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই সেতু নির্মাণের ফলে কান্দি মহাকুমা থেকে দ্রুত মানুষ বহরমপুর শহরে যাতায়াত করতে পারবেন। দুই লেন বিশিষ্ট ১০৫ মিটার দীর্ঘ এই সেতু বহরমপুর, কান্দি এবং সুলতানপুরকে সংযুক্ত করেছে। উদ্বোধনের পর মুখ্যমন্ত্রী এই সেতুর সার্ভিস রোডের দুপাশে গাছ লাগানোর নির্দেশ দেন।
সরকারি অনুষ্ঠানের পাশাপাশি তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালের ২০০ শয্যার ক্যান্সার ইউনিটের উদ্বোধন করেন। মেডিকা ক্যানসার হাসপাতাল উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এটি পূর্ব ভারতের সবচেয়ে উন্নত আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ। সিঙ্গাপুর সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই হাসপাতাল গড়ে উঠেছে।