সোশাল মিডিয়ায় আলাপ হওয়া বান্ধবীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ। এরপর বান্ধবী বিয়ের জন্য চাপ দিতেই কলকাতা ছেড়ে সোজা পাড়ি আমেরিকায়। মাস তিনেক আগে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে দেশে ফেরেন। ফের শনিবার পাড়ি দিচ্ছিলেন আমেরিকায়। তবে তার আগেই দিল্লি বিমানবন্দরে আসতেই অর্ঘ্য পট্টনায়েককে ধরে ফেলে সেখানকার অভিবাসন দফতর। রবিবার দিল্লি থেকে পেশায় ওই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকে গ্রেপ্তার করেন মধ্য কলকাতার নিউ মার্কেট থানার আধিকারিকরা।
কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১৯ সাল নাগাদ মেদিনীপুরের বাসিন্দা ওই যুবকের সঙ্গে সোশাল মিডিয়ায় পরিচয় হয় অভিযোগকারিণী ওই যুবতীর। ওই যুবতীও পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তাই দু’জনের মধ্যে সহজেই বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এরপর লকডাউন থানার কারণে দু’জনই বাড়িতে বসে কাজ করতেন। বিশ্রামের সময় সোশাল মিডিয়ায় দু’জন কথা বলতেন। এভাবে দু’জন ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। লকডাউন ওঠার পর দু’জনের মধ্যে দেখা হওয়া সুবিধাজনক হয়। মেদিনীপুর থেকে অর্ঘ্য কলকাতায় আসেন। অভিযোগ, যুবতীকে প্রথমে বিবাহিত বলে পরিচয় দেননি। ক্রমে ওই যুবক বান্ধবীকে বলেন যে, তাঁর বিবাহিত জীবন একেবারেই সুখী নয়। তাই তিনি তাঁর স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে তাঁকেই বিয়ে করতে চান। যুবতীও অভিযুক্ত যুবককে বিশ্বাস করে ফেলেন। এরপর দু’জন বিভিন্ন সময় কলকাতার একাধিক হোটেলে গিয়ে ঘর ভাড়া নেন। যুবতীর অভিযোগ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর সঙ্গে সহবাস করেন ওই যুবক। বছর দু’য়েকের ঘনিষ্ঠতার পর যুবতী অভিযুক্তকে বিয়ের জন্য চাপ দেন। কিন্তু যুবক জানান, তিনি আমেরিকা চলে যাচ্ছেন। এখনই বিয়ে করা সম্ভব নয়। যুবতীকে এড়িয়ে চলতে থাকেন তিনি। এরপর অর্ঘ্য একটি সংস্থার হয়ে কাজ করার জন্য আমেরিকায় পাড়ি দেন। থাকতে শুরু করেন ক্যালিফোর্নিয়ায়। যুবতী তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করতে থাকেন। কিন্তু বান্ধবীকে একেবারেই এড়িয়ে চলতে থাকেন ওই যুবক। সোশ্যাল মিডিয়াতেও যোগাযোগ রাখতে চাইতেন না।
এরপর ২০২২ সালে যুবতী তাঁর ওই ‘বন্ধু’র বিরুদ্ধে নিউ মার্কেট থানায় বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ জানান। পুলিশ আধিকারিকরা মেদিনীপুরে গিয়ে নিশ্চিত হন যে, যুবক আমেরিকায় রয়েছেন। মাস তিনেক আগে অর্ঘ্য আমেরিকা থেকে বাড়িতে ফিরে আসেন। পুলিশ সেই তথ্য জানত না। মাস দু’য়েক আগে পুলিশের পক্ষ থেকে যুবকের বিরুদ্ধে ‘লুক আউট সার্কুলার’ জারিহয়।সেই তথ্য জানতেন না অর্ঘ্যও।ফের তিনি আমেরিকায় পাড়ি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।ক্যালিফোর্নিয়ার বিমান ধরার জন্য শনিবার দিল্লি বিমানবন্দরে পা দেওয়া মাত্রই যুবককে ধরে ফেলে অভিবাসন দফতর।এরপর খবর যায় নিউমার্কেট থানায়।পুলিশ দিল্লিতে গিয়ে ওই যুবককে গ্রেপ্তার করে।এরপরই তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়।