সময় যত গড়াচ্ছে একের পর এক আরও ঘটনা সামনে আসছে, যা ঘটে গেছে শনিবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। শনিবার সারা রাজ্যে বুথগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দেখা কার্যত না পাওয়া গেলেও উত্তর দিনাজপুর জেলার চাকুলিয়া ব্লকের ধুমাগড় গ্রামে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। শনিবার বিকেলে জেলার চাকুলিয়া ব্লকের ২৫ নম্বর বুথে মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনীর পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে ৯ রাউন্ড গুলি চালিয়েছে বলে সূত্রে খবর। বিএসএফ-এর গুলিতে ওই এলাকার মহম্মদ হাসিবুল নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্তমানে বিহারের পূর্নিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ইসলামপুর পুলিশ জেলার সুপার ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। গুলি চালানোর কারণ নিয়ে মতানৈক্য থাকলেও সেন্ট্রাল ফোর্সের গুলি চালানোর কথা কংগ্রেস ও তৃণমূল উভয়েই স্বীকার করেছে।
উল্লেখ্য, উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর মহকুমার চাকুলিয়া ব্লকের সাহাপুর ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন ধুমাগড় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের বুথ হয়েছিল। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই বুথে সেন্ট্রাল ফোর্স মোতায়েন করা হয়। শনিবার বিকেল ৫ টা নাগাদ এই বুথে কর্তব্যরত সেন্ট্রাল ফোর্সের জওয়ানরা উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে লাঠিচার্জ করার পাশাপাশি ৯ রাউন্ড গুলি চালায়।
এলাকার প্রাথমিক স্কুল থেকে ২০ মিটার দূরে সেন্ট্রাল ফোর্সের গুলিতে আহত মহঃ হাসিবুলের বাড়ি। হাসিবুলের বাবা মহম্মদ জাহিদ জানান, ‘আমার ছেলে স্থানীয় ইটভাটায় কাজ করে। আমরা সকলেই তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক। আমার ছেলে কোনও ঝামেলায় থাকে না। শনিবার সকালেই আমরা ভোট দিয়ে আসি। বিকেল ৫ টা নাগাদ ছেলে বাড়ির পাশের বুথে ভোট দেখতে যায়। একটু পরই বুথে চিৎকার শুনতে পাই আমরা। তারপরই পরপর গুলির আওয়াজ পাওয়া যায়। এলাকার এক যুবক দৌড়ে এসে খবর দেয় যে আমার ছেলেকে সেন্ট্রাল ফোর্সের জওয়ানরা গুলি করেছে। খবর পেয়ে আমি ছুটে গিয়ে দেখি বাড়ি থেকে একটু দূরে একটা মাটির ঢিবির উপর সে পড়ে আছে। সারা শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। এলাকার সবাই দৌড়াদৌড়ি করে একটা অ্যাম্বুল্যান্স যোগাড় করে আনে। তাতে চাপিয়ে প্রথমে কিষাণগঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভর্তি করার কিছুক্ষণ পর অবস্থার অবনতি হওয়ায় সন্ধ্যায় তাকে পূর্নিয়ার রেফার করে দেওয়া হয়।’
স্থানীয় কংগ্রেস নেতা মহম্মদ এনামুল হুসেনও জানান, ‘হাসিবুল এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী। এলাকার কয়েকজন দুষ্কৃতীদের নিয়ে সে ওই বুথ ক্যাপচার করার চেষ্টা করছিল। সেন্ট্রাল ফোর্স বাধা দিতে গেলে তাদের সঙ্গে ঝামেলা বাঁধে। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতেই তারা গুলি চালায়।’