উত্তরবঙ্গে কোচবিহার থেকে ভোট প্রচার শুরু মমতার, বিঁধলেন বিএসএফকে

উত্তরবঙ্গ থেকে সোমবার পঞ্চায়েতের ভোটপ্রচার শুরু করেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন কোচবিহার দক্ষিণের চান্দামারি প্রাণনাথ হাইস্কুলরে মাঠে জনসভা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সভা থেকে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বঙ্গ বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করেন তৃণমূল সুপ্রিমো।এদিন মমতার বিদ্ধ করে বিএসএফকেও। এদিকে কোচবিহারে বিএসএফের গুলিতে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের এদিন সভাস্থলে মমতার সঙ্গে দেখাও যায়।

বিএসএফকে নিশানা করে মমতা বলেন, ‘গায়ের জোরে বিএসএফের এলাকা ১৫ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করে দেওয়া হয়েছে। এই জেলাতেও বিএসএফ সম্প্রতি গুলিকে করে মেরেছে। আমি কোচবিহারের বারবার আসি। কোচবিহারের মানুষকে ভালোবাসি। কোচবিহারে গুলি করে মারাটা যেন একটা অধিকারের মধ্যে পড়ে গিয়েছে।’ আর এই সূত্রেই মমতার জিজ্ঞাসা, ‘এরা করবে দেশ শাসন!’

সীমান্তরক্ষীর বাহিনীর একাংশের বিরুদ্ধে তৃণমূলনেত্রীর গলায় ছিল চড়া সুর। এরপরই তিনি স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশের সুরেই বলেন, ‘আমি স্থানীয় প্রশাসনকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে বলব। আমার কাছে খবর আছে, নির্বাচনের আগে বর্ডারে বর্ডারে মানুষকে বিএসএফ ভয় দেখাবে। ইডি-সিবিআইয়ের কথা বলে তুলে নেওয়ার কথা বলবে।‘ এই সাবাধানবাণীর সঙ্গে এ আশ্বাসও দেন যে, ‘আমি বলছি আপনাদের, কিছু করতে পারবে না ওরা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা রাজ্যের বিষয়, এটা কেন্দ্রীয় সরকারের আওতায় পড়ে না। ভয় দেখালে অভিযোগ করবেন, ঘরে বসে থাকলে হবে না। যে শহিদ পরিবার আজ কাঁদছে। তাঁর বদলা নেওয়ার জন্য তৃণমূলকে তিনটে ভোট দিতে হবে। আপনার পরিবার যাতে খালি না হয়ে যায়, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।’

এরই পাশাপাশি বিএসএফ-এর গুলিতে নিহত পরিবারগুলির পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে মমতা বলেন, ‘আমরা এই পরিবারগুলির পাশে থাকব। পরিবারের সদস্যরা যাতে অসহায় না হয়ে যায় সেটা আমরা দেখব। নির্বাচন চলছে তাই মঞ্চ থেকে এর বেশি কিছু আমি বলতে পারছি না। মানুষ বিপদে পড়লে আমরা সবসময় পাশে থাকার চেষ্টা করি। মানুষ জানে, আমি তাঁদের অভিভাবক। তাঁদের ছেলেমেয়েরা বিপদে পড়লে রক্ষার দায়িত্ব আমাদের।’

এরই পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এও জানান, বলেন, ‘এতদিন পঞ্চায়েত নিয়ে গুরত্ব দেওয়া হয়নি। এবার আমাদের যুবরা ওপিনিয়ন নিয়েছে। ৯৯ শতাংশ প্রার্থী ঠিক হয়েছে। এবার থেকে আমরা পঞ্চায়েত নিয়ন্ত্রণ করব। আর কেউ যদি টাকা চায় আমাকে ছবিটা পাঠিয়ে দেবেন তারপর আমি দেখে নেব। আমরা চাই মানুষের পঞ্চায়েত।’

পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সরব মুখ্যমন্ত্রী। অতীতেও তাঁকে একাধিকবার এই নিয়ে মুখ খুলতে দেখা গিয়েছে। কোচবিহারের এই সভা থেকে এদিন মমতা বলেন, ‘১০০ দিনের কাজের টাকা দিচ্ছে না, সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আমরা আমাদের সীমিত ক্ষমতা মধ্যে মানুষের জন্য কাজ করার চেষ্টা করছি। সব বঞ্চনার জবাব পঞ্চায়েত নির্বাচনে দিতে হবে।’ তৃণমূল সূত্রে খবর, উত্তরবঙ্গে একাধিক জনসভা করার কথা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।  কোচবিহার জেলায় এই জনসভা করার পর তিনি জলপাইগুড়ির মালবাজারের উদ্দেশে রওনা দেবেন। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার মালবাজার সংলগ্ন এলাকাতেও তিনি জনসভা করবেন। ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় স্তরে সেই প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × four =