আমেরিকা এবং ইজিপ্ট সফর থেকে ফেরার পরেই মণিপুর নিয়ে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সূত্রে খবর, তাঁকে মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই তাঁকে বিস্তারিত জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনেই সোমবার ওই বৈঠক হয়। সূত্রে এ খবরও মিলেছে, এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীকে মণিপুরের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে ‘ব্রিফ’ করেন। এদিনের এই বৈঠকে অংশ নেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণও। এদিন ওই উচ্চ স্তরের বৈঠকে ছিলেন একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও।
উল্লেখ্য, শনিবারই মণিপুরে কী করে শান্তির ফেরানো যায় তা নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ওই বৈঠকে একাধিক দল মণিপুরে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পক্ষে সওয়াল করে।
কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস সহ একাধিক দল শান্তি ফেরাতে মণিপুরে অবিলম্বে সর্বদলীয় প্রতিনিধি দল পাঠানোর দাবি জানায়। একই সঙ্গে সেই রাজ্যে আইন শৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন একাধিক দলের নেতারা। সেখানে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে এবং সেই রাজ্যের সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিং-এর ওপর কেউ আস্থা রাখতে পারছেন না বলেই জানান শাসক দলের নেতা এবং বিধায়করাই।
এবার এই ইস্যুকেই এটাকেই হাতিয়ার করে বিরোধীরা। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে জানান, যদি প্রধানমন্ত্রী মণিপুর নিয়ে সত্যিই উদ্বিগ্ন হন তাহলে তাঁর উচিত প্রথমেই সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়া।
প্রসঙ্গত, গত ৩ মে থেকেই উত্তপ্ত মণিপুর। সেখানে জাতি সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত মারা গিয়েছেন প্রায় ১৪০ জন। প্রায় সাড়ে ৬ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে অনেক বাড়ি, গির্জা এবং মন্দিরও। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এই হিংসার ঘটনা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন প্রধানমন্ত্রী। মণিপুর ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর চুপ করে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতা এবং মণিপুরের সাধারণ বাসিন্দারাও।
এমনকী গত রবিবারের মন কী বাতেও মণিপুর নিয়ে একটাও কথা বলেননি প্রধানমন্ত্রী। মণিপুরের বাসিন্দাদের দাবি, সেখানের ঘটনা নিয়ে হস্তক্ষেপ করুন প্রধানমন্ত্রী। সর্বদলীয় বৈঠকের পরে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, তাঁর আশা ইজিপ্ট থেকে ফেরার পরে মনিপুর নিয়ে চিন্তাভাবনা করবেন প্রধানমন্ত্রী। একাধিক দলের নেতার দাবি, মণিপুরের বাসিন্দাদের মনে আত্মবিশ্বাস ফেরাতে সেখানে যাওয়া উচিত প্রধানমন্ত্রীর। তাঁর সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরও যাওয়া উচিত বলেও মনে করেন তাঁরা। এদিকে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী জানান, তাঁরা সেখানে শান্তি ফেরাতে চেষ্টা করছেন। সেখানের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনগুলিকে গঠনমূলক আলোচনা করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে বলেও জানান তিনি।