আসল ওএমআর শিট চাই। না হলে প্রাথমিকের প্যানেল বাতিল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি কলকাতা হাইকোর্টের। এই প্রসঙ্গে মঙ্গলবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার মন্তব্য, ‘আসল ওএমআর শিট শনাক্ত করা না গেলে আদালত বাধ্য হবে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দিতে হবে।’ তাঁর নির্দেশ, ওএমআর শিটের আসল ডেটা খুঁজে বার করতে সিবিআইকে। ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট কোথায় রয়েছে তার হদিস শুরু করুক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে তাদের অতিরিক্ত রিপোর্ট দিয়ে সংক্ষেপে স্পষ্ট করে জানাতে হবে নিয়োগে কী ভাবে, কোথায় দুর্নীতি হয়েছে। চলতি মাসের শেষ সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি। এদিন এই প্রসঙ্গে আদালতের পর্যবেক্ষণ, তথ্য প্রযুক্তি বিজ্ঞান বলছে ডেটা অর্থাৎ ডিজিটাইজড তথ্য সহজে নষ্ট হয় না। এমনকী মুছে ফেললেও তা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। বিচারপতি মান্থা আরও বলেন, ‘পৃথিবী থেকে মঙ্গলে গেলেও ডেটা পাওয়া সম্ভব। ওই ডেটা না পাওয়া গেলে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করতে বাধ্য থাকবে আদালত।’
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের টেটে কারচুপির অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। রাহুল চক্রবর্তী সহ কয়েক জন চাকরিপ্রার্থীর অভিযোগ, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বেআইনি ভাবে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। আর এখানেই বিচারপতি মান্থার পর্যবেক্ষণ, পর্ষদের দাবি সব ওএমআর শিট ডিজিটাইজড ডেটা হিসাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে। ২০১৯ সালে হেমন্ত চক্রবর্তী নামে এক পরীক্ষার্থীকে ওএমআরের প্রতিলিপি দেওয়া হয়। অর্থাৎ, এর থেকে স্পষ্ট ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট রয়েছে। সুতরাং ওএমআর শিটের ডেটাও পাওয়া যেতে পারে। বিচারপতি জানান, ওই সব ডেটা বা তথ্য সিবিআইকে খুঁজে বের করতে হবে। হার্ডডিস্ক, অন্য কোনও সূত্র বা আবার প্রয়োজনে পর্ষদও অফিসেও যেতে পারবে সিবিআই। আর এই প্রসঙ্গেই বিচারপতির মন্তব্য, ‘পৃথিবী থেকে মঙ্গলে গেলেও ডেটা পাওয়া সম্ভব। ওই ডেটা না পাওয়া গেলে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করতে বাধ্য থাকবে আদালত।’
এদিকে ২০১৪ সালের টেটের ওএমআর শিটের আসল বা হার্ডকপি নষ্ট করা হয়েছে বলে আদালতে জানায় পর্ষদ। তাদের বক্তব্য, ডিজিটাইজড ডেটা হিসাবে ওই সব তথ্য সংরক্ষণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সিবিআই জানায়, তদন্তে উঠে এসেছে ৩০৪ জনকে বেআইনি ভাবে নিয়োগ করা হয়েছে। চার্জশিট এবং অতিরিক্ত চার্জশিট ফাইল করা হয়। আরও তদন্ত চলছে। চূড়ান্ত চার্জশিট এখনও দেওয়া হয়নি। প্রসঙ্গত, প্রাথমিকের ওএমআর শিট সংক্রান্ত মামলাগুলির শুনানি চলছিল হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। তিনি ইস্তফা দেওয়ায় মামলাগুলি যায় বিচারপতি মান্থার এজলাসে। মঙ্গলবার বিচারপতি মান্থা জানান, এই মামলার সিবিআই-এর অনেক রিপোর্ট এজলাসে আসেনি। হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে ওই সব রিপোর্ট এজলাসে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।