সিঙ্গুর মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন আরও এক বিচারপতি

আরবিট্রাল ট্রাইব্যুনালের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ফের আদালতের দ্বারস্থ হয় রাজ্য শিল্প নিগম। এদিকে কলকাতা হাইকোর্টের একের পর এক বিচারপতি এই মামলা শুনতে আপত্তি জানিয়ে সরে দাঁড়াচ্ছেন। শুক্রবার এই মামলা ছাড়লেন বিচারপতি রবি কিষেন কাপুর। এর আগে বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য ব্যক্তিগত কারণে এই মামলা থেকে সরে গিয়েছিলেন। প্রসঙ্গত, টাটাদের ন্যানো কারখানা করা নিয়ে একসময় উত্তাল হয়েছিল সিঙ্গুর। রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের ক্ষেত্রে অন্যতম ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছিল সিঙ্গুর। সম্প্রতি মুম্বই স্টক এক্সচেঞ্জকে টাটা গোষ্ঠী বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, আরবিট্রাল ট্রাইব্যুনাল নির্দেশ দিয়েছে, বঙ্গ সরকারের থেকে সিঙ্গুরের জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ তারা ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা পাবে। মামলার খরচ বাবদ দিতে হবে এক কোটি।
আরবিট্রাল ট্রাইব্যুনালের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ফের আদালতের দ্বারস্থ হয় রাজ্য শিল্প নিগম। কিন্তু, কলকাতা হাইকোর্টের একের পর এক বিচারপতি এই মামলা শুনতে আপত্তি জানিয়ে সরে দাঁড়াচ্ছেন। শুক্রবার এই মামলা ছাড়েন রবি কিষেন কাপুর। এর আগে বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য ব্যক্তিগত কারণে এই মামলা থেকে সরে গিয়েছিলেন। এখন দেখার মামলাটি কার এজলাসে ওঠে।
বঙ্গ রাজনীতির ইতিহাসে অন্যতম সফলতম মেগা আন্দোলনের মধ্যে অন্যতম সিঙ্গুর আন্দোলন, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের। রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের প্রেক্ষাপট লেখার ক্ষেত্রে অন্যতম ক্ষেত্র ছিল সিঙ্গুর, মত তাঁদের। ২০০৬ সালে সপ্তম বামফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য শপথ নেওয়ার পর সিঙ্গুরে গাড়ি কারখানা তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু, এরপর গঙ্গা দিয়ে বহু জল গড়িয়ে যায়। কৃষি জমিতে কারখানা গড়া হচ্ছে, এই সব আরও একাধিক দাবিকে সামনে রেখে আন্দোলন করেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর ২০০৮ সালে সিঙ্গুর থেকে সরার কথা জানায় টাটারা। এরপর এক দশকের বেশি সময় কেটে গিয়েছে। সিঙ্গুর নিয়ে নানা মুনির নানা মতামত উঠে এসেছে। এরপর ২০১৬ সালে বাম জমানাতে টাটাদের গাড়ি কারখানার জন্য নেওয়া জমি শীর্ষ আদালতের নির্দেশে ফেরত দেওয়ার সময় অনেকাংশে ‘চাষযোগ্য’ করে দেওয়া হয়, দাবি করা হয়েছিল এমনটাই। জেলা কৃষি দফতরের একটি সূত্রের দাবি, সিঙ্গুরের ন্যানো কারখানার প্রকল্পের ৯৯৭ একর জমির মধ্যে ৮৪৩ একর কৃষিযোগ্য। তার মধ্যে ৫০০ একর জমিতে একসময় শুরু হয়েছিল চাষ। ২৩০ একর জমিতে হয়েছিল ধান চাষ। ৫ একরে হয় আলু, ৭০ একরে তিল, ২৫ একরে কলাই, ২৫ একরে মুগ চাষ। নতুন করে এই মামলা কোন বিচারপতির কাছে যায়, সেই দিকে সব নজর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × four =