অলোকেশ ভট্টাচার্য
‘বাংলায় দুর্গাপুজো হয়, এটা ‘উৎসব’ নয়’, এবার এমনটাই মন্তব্য করলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। অসমের মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের ভিডিয়ো শেয়ার করে কড়া সমালোচনাও করা হল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে। প্রসঙ্গত, বাঙালির শ্রেষ্ঠ ‘উৎসব’ দুর্গোৎসব, এ কথা বহুজন বিদিত। দেশের সীমান্ত পেরিয়ে বিদেশের মাটিতেও বাংলার এই উৎসবের আকর্ষণ সমান।
এদিকে অসমের মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তৃণমূলের এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিয়োও শেয়ার করা হয়। সেখানে দেখা যাচ্ছে, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা একটি বক্তৃতায় বলছেন, ‘দুর্গাপুজো হয় বাংলায়, দুগা উৎসব হয় না। বাংলায় দুর্গা পুজো শুরু হয়েছে, আমাদের এটাকে উৎসব বানাতে হবে।’
আসামের মুখ্যমন্ত্রীর এই ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য নিয়ে চূড়ান্ত সমালোচনা করা হয় তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে। তৃণমূল এক্স হ্যান্ডেলে প্রশ্ন তোলা হয়, ‘আমাদের দুর্গাপুজো উদযাপন নিয়ে হিমন্ত কীভাবে প্রশ্ন করেন? মা দুর্গাকে নিয়ে মোদির নেতার এই মন্তব্য বাংলা কোনওভাবেই সহ্য করবে না।’ প্রসঙ্গত, প্রসঙ্গত, ২০২১ সালেই ইউনেস্কোর ইনট্যানজিবল হেরিটেজের স্বীকৃতি পায় বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। বিগত কয়েক বছর ধরে এই উৎসবে পুজো কমিটিগুলিকে আর্থিক সাহায্য থেকে শুরু করে দশমীর পর শ্রেষ্ঠ পুজো প্রতিমা নিয়ে বর্ণাঢ্য কার্নিভালের আয়োজন করা হয় রাজ্য সরকারের তরফে।
তবে হিমন্তের এই বক্তব্যে পাল্টা তৃণমূলের তরফ থেকে কটাক্ষের সুরে জানানো হয়, প্রথমে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ মা দুর্গার বংশ নিয়ে প্রশ্ন তোলার সাহস দেখিয়েছেন। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ মিথ্যা দাবি করেছিলেন যে বাংলায় দিদি দুর্গাপুজো উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এবার মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার বক্তব্য, দুর্গাপুজোকে ‘দুর্গোৎসব’ বলা হয় না। তৃণমূলের কথায়, ‘বাংলার ঐতিহ্য ও বিশ্বাস সম্পর্কে তাঁদের অজ্ঞতা আরও প্রকট হল।’
বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র শান্তনু সেন জানান, ‘যে মুখ্যমন্ত্রী নিজের রাজ্যে এনআরসি করে ১৩ লাখ হিন্দু বাঙালিকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে পচিয়ে মারে, তাঁরা বাঙালির দুর্গোৎসব নিয়ে কী বলবে?’ একসময় বিজেপি বলেছিল বাংলায় দুর্গোৎসব হয় না। আজকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে দুর্গাপুজোয় মানুষ ৪ দিনের জায়গায় টানা প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে আনন্দোৎসব পালন করছেন। আজকে বাংলার দুর্গোৎসব ইউনেস্কো হেরিটেজ স্বীকৃতি পেয়েছে। আরেক বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ আবার পিতৃ পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বিজেপি বাংলার সংস্কৃতির ‘অপমান’ করছে বলে দাবি করেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে অসমের তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব বলেন, ‘অন্ধের কী বা দিন কী বা রাত। বাঙালি সংস্কৃতি সম্পর্কে কোনও ধারণা না থাকা মানুষকে বাংলায় প্রচার করতে পাঠানো উচিত হয়নি।’