কুকুর কামড়ালে যা করবেন না

ডাঃ তমাল বিশ্বাস

 

সম্প্রতি কুকুরের কামড়ের অনেক ঘটনা কথা সামনে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে যে, কুকুরের কামড়ের পর হলুদ, লঙ্কা, কোলগেট ইত্যাদি লাগিয়ে মানুষ হাসপাতালে পৌঁছে যাচ্ছেন। চিকিৎসকরা বলছেন এমনটি না করতে, কারণ এতে ত্বকে সংক্রমণ হতে পারে।

কুকুরের কামড়ের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল এরপর রোগী সঠিক প্রাথমিক চিকিৎসা পান না। এমন পরিস্থিতিতে অনেক রোগী প্রায়ই হাসপাতালে আসেন, যাঁরা নিজেরাই কুকুরের কামড়ের চিকিৎসা করার চেষ্টা করেন। কেউ ক্ষতস্থানে হলুদ লাগান, কেউ লাল লঙ্কার গুঁড়ো, কেউবা ক্ষতস্থানে মোটা ব্যান্ডেজ লাগান। যার কারণে কুকুরের লালায় থাকা ভাইরাস কমার পরিবর্তে দ্রুত রোগীর শরীরের ভিতরের টিস্যু ও রক্তে পৌঁছে যায়, যা ক্ষতিকর।

এই প্রসঙ্গে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, কুকুরের কামড়ের ফলে জলাতঙ্ক নামক রোগ হয়। এই রোগটি এতটাই বিপজ্জনক যে এর চিকিৎসা সম্ভব নয় এবং মানুষ অচিরেই প্রায় প্রাণ হারায়। কুকুরের কামড়কে তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম ক্যাটাগরিতে কুকুরের লালা অক্ষত ত্বকের সংস্পর্শে আসে, দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে এটি ব্যক্তির ত্বকে আঁচড়ের সৃষ্টি করতে পারে এবং তৃতীয় ক্যাটাগরি সবচেয়ে বিপজ্জনক, যেখানে মানুষের শরীর থেকে কুকুর বা অন্য কোনও প্রাণী মাংস বের করে নেয়।

কুকুরে কামড়ানোর পর ক্ষতস্থানে হলুদ, লবণ ও লঙ্কা মাখিয়ে অনেকে আসেন, যা ঠিক নয়। তিনি বলেন, কুকুরের কামড়ের ক্ষেত্রে আহত স্থানটি প্রায় ১০ মিনিট ধরে জলে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং এর জন্য সাবানও ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে খালি হাতে নয়। ১০ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য পরিষ্কার জল দিয়ে ক্ষত ধোয়ার পরে, বেটাডিন ইত্যাদির মতো অ্যান্টিসেপটিক প্রয়োগ করতে হবে। এছাড়া টিটেনাস এবং জলাতঙ্ক উভয়ের টিকা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিতে হবে। কিছু মানুষ কুকুরের কামড়ের পরে ক্ষত সেলাই করেন, এমনটি করা উচিত নয়। এর পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অ্যান্টিবায়োটিকও খেতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, কুকুর কামড়ানোর পরে, নন-ভেজ এবং মশলাদার খাবার এড়ানো উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four + four =