রামকৃষ্ণ মিশনের জমি দখলের চেষ্টা ও কর্মীদের উপর হামলার ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল ভক্তিনগর থানার পুলিশ। শনিবার রাতে ঘটনায় মূল অভিযুক্ত প্রদীপ রায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগে রামকৃষ্ণ মিশনের সেবক হাউসে হামলার ঘটনায় ৮ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল।
প্রসঙ্গত, দুই সপ্তাহ আগে শালুগারায় সেবক হাউসে হামলা চালানো হয়। সেবক হাউসের জমি দখলের চেষ্টা করা হয়। এরপরই রামকৃষ্ণ মিশনের তরফে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়। ঘটনার পর শোরগোল পড়ে বঙ্গ রাজনীতি সহ সমাজের সর্বস্তরে। অভিযোগ পেয়ে এক এক করে পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতার করে। যদিও মূল অভিযুক্ত প্রদীপ রায় এতদিন পলাতক ছিল। গত দুই সপ্তাহ ধরে তার খোঁজে ছিল পুলিশ। এরপর তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে শিলিগুড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছে অভিযুক্ত।
এরপরই তৎপরতা বাড়ে পুলিশের। তল্লাশি চালিয়ে শনিবার রাতে প্রদীপ রায়কে ধরা হয়। প্রদীপের বিহারে পালানোর পরিকল্পনায় ছিল বলে জানায় পুলিশ। স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ ও ভক্তিনগর থানা অভিযান চালিয়ে প্রদীপকে গ্রেফতার করে।
এই প্রসঙ্গে মেয়র গৌতম দেব জানান, ‘রামকৃষ্ণ মিশনের ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মিউটেশনের কাগজ দেওয়া হয়েছে রামকৃষ্ণ মিশনকে।’ এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে রবিবার সকালে সেবক হাউসে যান শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। সেখানে মোতায়েন পুলিশ কর্মীর সঙ্গে কথা বলেন। বিধায়ক বলেন, প্রদীপ রায়কে পুলিশ গ্রেফতার করেছে খুব ভাল। কিন্তু প্রদীপকে ব্যবহার করে অনেকে এই জমি দখলের চেষ্টা করছিল। তাদের কেন পুলিশ গ্রেফতার করছে না তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। একইসঙ্গে পুলিশ ও শাসক দল তৃণমূলের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। অন্যদিকে, রামকৃষ্ণ মিশনের সেবক হাউসে হামলার ঘটনার পর পুরনিগম তড়িঘড়ি মিউটেশনের কাগজ মিশনের হাতে তুলে দিয়েছে বলেই সূত্রে খবর।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ মে, রবিবার, রামকৃষ্ণ মিশনে শিলিগুড়ির ‘সেবক হাউস’ নামে একটি বাড়িতে দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ ৩০-৩৫ জন দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে জোর সেখানে ঢুকে সন্ন্যাসীদের উপর আক্রমণ করে। পাঁচ সন্ন্যাসী ও নিরাপত্তারক্ষীকে তুলে নিয়ে গিয়ে এনজেপি স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হয়। ঘটনায় হইচই পড়ে যায়। শিলিগুড়ির ভক্তিনগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয় রামকৃষ্ণ মিশনের তরফে। এর আগে এই ঘটনায় আটজনকে গ্রেফতার করা হলেও মূল অভিযুক্ত এতদিন অধরা ছিল।