উত্তরবঙ্গে ভারী-অতি ভারী বৃষ্টির কথা জানাল আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। সঙ্গে এও জানানো হয়েছে, দক্ষিণবঙ্গেও শুক্রবার ব্যাপক বৃষ্টি হবে বেশ কয়েকটি জেলায়। বেশ কিছু জেলায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। তবে দক্ষিণবঙ্গে শুক্রবার থেকেই কমবে বৃষ্টির পরিমাণ। বাড়বে তাপমাত্রা ও আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি। এদিকে শনিবার থেকে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি আরও বাড়বে।
এদিকে কলকাতায় শুক্রবার সকাল থেকেই মেঘলা আকাশ। বেলা বাড়লে ধীরে ধীরে কাটবে মেঘ। বিক্ষিপ্তভাবে দু-এক পশলা বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা বৃষ্টি। ক্রমশ বৃষ্টির পরিমাণ কমবে। শনিবার থেকে ফের বাড়বে তাপমাত্রা। জলীয় বাষ্প থাকায় অস্বস্তিও বাড়বে। শুক্রবার কলকাতা শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৮.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ২ ডিগ্রি বেশি তাপমাত্রা। এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিক তাপমাত্রার থেকে ২ ডিগ্রি কম। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ৮৭-৯৪ শতাংশ। আগামী ২৪ ঘণ্টায় কলকাতার তাপমাত্রা ২৮-৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে।
এদিকে দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়া নিয়ে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, শুক্রবার ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা দু-তিন জেলায়। হালকা-মাঝারি বৃষ্টি চলবে সব জেলাতেই। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ও বৃষ্টির সতর্কতা দক্ষিণের জেলাগুলিতে। তবে শুক্রবার থেকে জেলায় জেলায় তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করবে। বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় বাড়বে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি বাড়বে। দক্ষিণবঙ্গে তিন-চার জেলাতে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করেছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, নদিয়া ও উত্তর ২৪ পরগণায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ দু-এক পশলা ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। সঙ্গে এও জানানো হয়েছে, শুক্রবার থেকেই বৃষ্টির পরিমাণ কমবে, দক্ষিণবঙ্গে। শনিবার থেকে সোমবারের মধ্যে তাপমাত্রা বাড়বে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। ২-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাড়তে পারে। তাপমাত্রার সঙ্গে বাড়বে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি।
এদিকে উত্তরবঙ্গে প্রবল বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা। আগামী কয়েকদিন অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। উত্তরবঙ্গের ৩ জেলায় জারি হয়েছে অতি ভারী বৃষ্টির কমলা সতর্কতা। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারে ৭০-২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। ভারী বৃষ্টি (১০০ মিলিমিটার পর্যন্ত) হতে পারে দার্জিলিং, কালিম্পং, মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে। প্রবল বৃষ্টির কারণে উত্তরবঙ্গের পার্বত্য এলাকায় দার্জিলিং ও কালিম্পংয়েরর বেশ কিছু এলাকায় ধস নামার সম্ভাবনা রয়েছে। জলস্তর বাড়বে তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকা, সংকোষের মতো উত্তরবঙ্গের নদীগুলিতে। শুধু তাই নয়, প্রবল বৃষ্টির কারণে দৃশ্যমানতাও কমে যেতে পারে পার্বত্য এলাকায়। উত্তরবঙ্গের নিচু এলাকা প্লাবিত হতে পারে। নিচু এলাকার শস্য ও সবজি চাষের ক্ষতি হতে পারে। এদিকে আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, পূর্ব-পশ্চিম নিম্নচাপ অক্ষরেখা রয়েছে রাজস্থান থেকে। অক্ষরেখার অন্য প্রান্ত বঙ্গোপসাগর থেকে ধীরে ধীরে উপরের দিকে উঠে উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির দিকে এগোচ্ছে। এই রেখার ফলে সক্রিয় মৌসুমী বায়ু। এই রেখা মধ্যপ্রদেশের সুস্পষ্ট নিম্নচাপের উপর দিয়ে ঝাড়খণ্ড এবং গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর অবস্থান করছে। শনিবার এই রেখা সরে গেলে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পরিমাণ কমবে। ফলে আগামী কয়েক দিন গুজরাত, রাজস্থান, পঞ্জাব, হরিয়ানাতে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা। ভারী বৃষ্টি হবে উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং পূর্ব ভারতের অসম, মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশে। সিকিম এবং বিহারে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। দক্ষিণ ভারতের কেরল, মাহে, অন্ধ্রপ্রদেশে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা।