বুধে লেক গার্ডেন্সের এক গেস্ট হাউসে চলেছিল গুলি। বান্ধবীকে গুলি করে আত্মঘাতী হয়েছিলেন এক যুবক। এর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ফের শহর কলকাতায় গুলি চালানোর ঘটনা। এবারের ঘটনাস্থল টালিগঞ্জ থানার অন্তর্গত লেক অ্যাভেনিউ। সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়, এক বহুতল বাড়ির এক ফ্ল্যাটে লুঠপাটের চেষ্টা হয়। কিন্তু, ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা চিৎকার করে ওঠায়, ওই বহুতলের আরও কিছু বাসিন্দা সতর্ক হয়ে যান। পরিস্থিতি প্রতিকূল দেখে পালায় ডাকাতরা। তবে যাওয়ার পথে শূন্যে ১ রাউন্ড গুলি চালায় তারা বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় অবশ্য কোনও হতাহতের খবর নেই।
সূত্রে খবর, টালিগঞ্জ থানার অন্তর্গত ৬৮ নম্বর লেক অ্যাভেনিউয়ের এক অভিজাত বহুতলের নয় তলায় থাকেন প্রবীণ দে দম্পতি। দেবাশিসবাবুর বয়স ৬৫ বছর এবং স্ত্রী পুনমের বয়স ৫৯। দেবাশিসবাবু পেশায় ব্যবসায়ী। এদিকে, ওই বহুতলে গত ৫ বছর ধরে সাফাইকর্মী হিসেবে কাজ করত ঝাড়খণ্ডের গিরিডির বাসিন্দা সঞ্জয়। প্রতিদিনের মতোই, গতকাল সন্ধ্যে সাড়ে ছ’টা নাগাদ বহুতলে ঢুকেছিল সে। সঙ্গে ছিল আরও দুই যুবক। তাদের নিজের বন্ধু বলে পরিচয় দেয় সে। এরপর সোজা চলে যায় নয় তলার ফ্ল্যাটে। সেখানে একটিই ফ্ল্যাট। কলিং বেল বাজিয়ে গৃহকর্তার নাম ধরে ডাকে। পরিচিত মুখ দেখে দরজা খুলে দিয়েছিলেন দেবাশিস। দরজা খুলতেই স্বমূর্তি ধারণ করে সঞ্জয় ও বাকি দু’জন। ওই ফ্ল্যাটে লুঠপাটের চেষ্টা করা হয়। আতঙ্কে চিৎকার করে উঠেছিলেন পুনম দে। তাঁর চিৎকার কানে পৌঁছয় নীচের একাধিক ফ্ল্যাটের বাসিন্দার। কয়েকজন বাসিন্দা উপরে ওঠার চেষ্টা করেন। এতেই পালিয়ে যায় ওই ৩ জন। আর পালানোর পথ পরিষ্কার করতেই, সেই সময় তারা ১ রাউন্ড গুলি চালায় বলে অভিযোগ করেছেন বাসিন্দারা।
পালিয়েও অবশ্য শেষ রক্ষা হয়নি সঞ্জয় ও বাকি দুজনের। বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে রাতেই ওই তিনজনকে গ্রেফতার করেছে লালবাজারের গুণ্ডা দমন শাখা। এদিকে, ওই আবাসনটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত জোরদার। আগাগোড়া সিসিটিভি দিয়ে মোড়া। আবাসনে যাতায়াতকারীদের সকলকেই নাম লিখে, পরিচয় দিয়ে ঢুকতে হয়। গেটের নিরাপত্তা রক্ষীরা সকলের পরিচয়পত্র খতিয়ে দেখেন। ফলে অপরিচিত কারও পক্ষে এই বহুতলে হুট করে ঢুকে পড়া কার্যত অসম্ভব। তাই আবাসনে প্রবেশের ছাড়পত্র আছে এই রকম কাউকেই বেছে নিয়েছিল বাকি দুই দুষ্কৃতি বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান তদন্তকারীদের।