রাতের নিরাপত্তায় আরও জোর কলকাতা পুলিশের তরফে

তিলোত্তমা কাণ্ডের পর রাতের নিরাপত্তায় আরও জোর দেওয়া হচ্ছে লালবাজারের তরফ থেকে। এর পাশাপাশি রাতের শহরে নজরদারিও বাড়াতে তৎপর লালবাজার। বাড়তি সতর্কতা কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের। রাতের ডিউটিতে জোর দেওয়ার পাশাপাশি নাকা পয়েন্টগুলিতে আরও নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেপরোয়া গাড়ি চালানো, ওভারটেক রুখতে কড়া পদক্ষেপ পুলিশের। হেলমেটহীন বাইক আরোহীদের বিরুদ্ধেও কড়া ব্য়বস্থা নেওয়া হবে। ট্রাফিক গার্ড লাগোয়া হাসপাতাল-হস্টেলে বাড়তি নজরদারি চলবে। আরও জোর দিতে বলা হয়েছে মহিলা ও শিশুদের সুরক্ষায়। অন্যদিকে রাজ্য পুলিশের তরফে একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। ১৮ দফা যে নির্দেশিকা জারি হয়েছে তাতে বলা হয়েছে,

কোনও খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মামলা রুজু করতে হবে।

মহিলা এবং শিশুদের ক্ষেত্রে সহানুভূতি নিয়ে কাজ করতে হবে।

ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছতে হবে এবং সেই জায়গা ‘পুলিশ লাইন পার করবেন না’ টেপ দিয়ে ঘিরে ফেলতে হবে। ঘটনাস্থল সংরক্ষিত রাখতে হবে। পুলিশ সুপার বা সিপি পদমর্যাদার অফিসারদের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার কথাও বলা হয়েছে।

⁠ঘটনাস্থলের ভিডিয়োগ্রাফি করতেই হবে। ⁠স্নিফার ডগ, ফরেনসিক এক্সপার্ট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবে দ্রুত। সিজার লিস্ট তৈরির সময় সিসিটিভির টাইম ম্যাচের পাশাপাশি ঘড়ি এবং মোবাইল দেখে টাইম এবং তারিখ লেখা বাধ্যতামূলক।

⁠আত্মীয়পরিজনদের ঘটনা সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেওয়া এবং ময়নাতদন্ত পর্যন্ত তাঁদের সঠিক পথে তথ্য দিতে হবে। ঘটনার পর থেকে ওসি-আইসি পদ মর্যাদার অফিসাররা নিরন্তর যেন পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন।

⁠ময়না তদন্তের সময় এগজিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এবং রক্তের সম্পর্কের কেউ বা পরিবারকে রাখতে হবে। ভিডিয়োগ্রাফি বাধ্যতামূলক। ভিসেরা, ভ্যাজাইনাল সোয়াব সংগ্রহ এবং তা সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।

⁠পরিবারকে দিয়ে দ্রুত এফআইআর করাতে হবে। এরকম কাউকে না পাওয়া গেলে সুয়োমোটো করে অভিযোগ দায়ের করতে হবে।

⁠অপরাধীকে দ্রুত চিহ্নিত করার পাশাপাশি টিম তৈরি করে অপরাধীকে দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। অপরাধীকে দিয়ে অপরাধের পুনর্নির্মাণ দ্রুত জরুরি।

⁠সিসিটিভি ফুটেজ যথাযথ সংরক্ষণ করা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে হবে।

⁠সিজার লিস্টের ভিডিয়োগ্রাফি এবং তদন্তের স্বার্থে নেওয়া সব বয়ানের ভিডিয়োগ্রাফি বাধ্যতামূলক। নতুন আইন মেনে তা সংরক্ষণ করা বাধ্যতামূলক।

⁠ঘটনার গুরুত্ব বুঝে, আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতি বোঝা এবং সেই মতো পুলিশ মোতায়েন করতে হবে।

প্রতিনিয়ত মিডিয়া ব্রিফিং করতে হবে। তবে তা করবেন উচ্চপদস্থ অফিসার যিনি ঘটনা সম্পর্কে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল।

⁠পুলিশের সকলকে মামলা সম্পর্কে গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে। বিশেষ করে মিডিয়ার কাছে যেন আগে থেকে খবর না বেরিয়ে যায়।

⁠ফেক নিউজ এড়াতে সোশ্যাল মিডিয়ার উপর সর্বক্ষণ নজরদারি চালাতে হবে।

⁠ফেক নিউজ বন্ধ করতে অফিশিয়ালি সত্য তথ্য দিয়ে পাল্টা পোস্ট করার নির্দেশ।

জ়োনাল এডিজি -আইজি পদমর্যাদার অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সব স্তরের পুলিশকর্মীদের এ ধরনের বিষয় নিয়ে সচেতন করা।

ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, আরজি করকাণ্ডে কলকাতা পুলিশকে একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে উঠছে প্রশ্ন। তাই এবার কোমর বাধছে পুলিশ। যদিও পুলিশ মহলের যদিও দাবি , এই নির্দেশিকা আগেও ছিল। নতুন করে সব জেলা আধিকারিক থেকে শুরু করে এডিজি-আইজি পদমর্যাদার পুলিশ, সমস্ত উচ্চপদস্থ কর্তাদের এই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 + three =