পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে বড় নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দিল, পঞ্চায়েত ভোটের ফল ঘোষণার পরবর্তী ১০ দিন রাজ্যে মোতায়েন থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কেন্দ্রকে সেই অনুযায়ী নির্দেশিকা জারি করতে হবে বলে নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। পাশাপাশি আদালত এ নির্দেশও দেয়, ব্যালট বাস্ক নিয়ে যাওয়ার সময়, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। আদালত আরও জানায়, ভোট শেষ হওয়ার পর কমিশন পর্যাপ্ত সময় পর্যন্ত বাহিনী রাখার ব্যবস্থা করবে।
প্রসঙ্গত, অতীতে বাংলার নির্বাচন পরবর্তী সময়ে যে অশান্তি ও হিংসার অভিযোগ উঠেছে, সেই প্রেক্ষিতে যাতে ভোটের পরেও কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকে রাজ্যে, সেই নিয়ে আবেদনও জানানো হয় আদালতে। তারই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার এমনই রায় দেয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মতো রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট পরিচালনার জন্য আরও বাহিনী আসার কথা। কিন্তু বাকি ৪৮৫ কোম্পানি বাহিনীর সম্পূর্ণ এখনও এসে পৌঁছয়নি। এদিকে শনিবার নির্বাচন।
এই মামলায়এদিন আদালতে এ প্রশ্নও ওঠে, কেন কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ঘিরে এত জটিলতা তৈরি হচ্ছে, তা নিয়েও। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রের তরফে ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল কমিশনের ঘাড়েই বন্দুক রাখেন। তাঁর বক্তব্য, কমিশন কত সংখ্যক বাহিনী লাগবে, সেটা বলার পাশাপাশি, কোন বাহিনী লাগবে, সিআরপিএফ না এসএসবি, সেটাও উল্লেখ করে দিয়েছে। আর সেই কারণেই তাড়াতাড়ি বাহিনী পাঠানোর ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে বলে দাবি ডেপুটি সলিসিটর জেনারেলের। এরপরই এই সমস্যা দূর করে প্রধান বিচারপতি এও জানিয়ে দেন, কমিশন শুধু ঠিক করবে বাহিনীর সংখ্যা। তবে কোন বাহিনী আসবে, সেটা আইজি বিএসএফ ঠিক করবেন। এরই পাশাপাশি বিচারপতি জোর দেন, যাতে শুক্রবার রাতের মধ্যেই গোটা বাহিনী রাজ্যে পৌঁছে যায়। বিষয়টি যাতে দ্রুত হয়ে যায়, তা দেখার জন্যও বলেন প্রধান বিচারপতি। তখন কেন্দ্রের তরফে আশ্বস্ত করা হয়, শুক্রবার রাতের মধ্যেই মোট ৬৫৮ কোম্পানি বাহিনী রাজ্যে পৌঁছে যাবে। আর বাকি বাহিনীও ভোটের দিন সকালে পৌঁছে যাবে বলে জানান ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল।
উল্লেখ্য, এদিন আদালতে কমিশনের তরফে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে মূলত দুটি প্রস্তাব দেওয়া হয়। যার একটি হল, প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর একজন জওয়ান কিংবা, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের নিয়ে একটি মোবাইল পেট্রোলিং টিম বানানো। এক একটি টিম ছ’টি পোলিং স্টেশনের দায়িত্বে থাকবে। যদিও এই বিষয়ে আদালতের থেকে স্পষ্ট কোনও দিকনির্দেশ দেওয়া হয়নি। আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আদালতের কাছে উপযুক্ত এক্সপার্টাইজ় নেই। সেই কারণে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আইজি ও কমিশন একসঙ্গে পরামর্শ করে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।