মহারাষ্ট্র ও ঝাড়খণ্ড এই দুই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের সূচি ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন। ২৮৮ সদস্যের মহারাষ্ট্র বিধানসভার নির্বাচন হবে এক দফাতেই। এই নির্বাচন হবে ২০ নভেম্বর। অর্থাৎ, দীপাবলী আর কালীপুজোর ঠিক পরেই। অন্যদিকে, ৮২ আসনের ঝাড়খণ্ড বিধানসভার ভোট গ্রহণ করা হবে দুই দফায়। সেখানে ভোট গ্রহণ,১৩ নভেম্বর এবং ২০ নভেম্বর। ২৩ নভেম্বর, দুই রাজ্যের ভোটের ফলই একসঙ্গে ঘোষণা করা হবে। মহারাষ্ট্রে একনাথ শিন্ডের শিবসেনা এবং অজিত পওয়ারের এনসিপির সঙ্গে জোট বেঁধে ক্ষমতায় ফিরতে চায় বিজেপি। এই প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার বলেন, ‘মহারাষ্ট্রে ১,৮৬,০০০টি ভোট কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। ঝাড়খণ্ডে ভোট কেন্দ্র করা হবে ২৯,০০০টিরও বেশি। মহারাষ্ট্রে বৈধ ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৯ কোটি ৬০ লক্ষ। আর ২ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষ ঝাড়খণ্ডে ভোট দিতে যাবেন। ৮৫ বছরের উপরে যাদের বয়স, সেই প্রত্যেক প্রবীণ নাগরিকরা বাড়ি থেকেই ভোট দিতে পারবেন। ভোটের সময় তারা গোপনেই তাঁদের মতামত জানাতে পারবেন। তবে প্রমাণ রাখার জন্য, পুরো প্রক্রিয়াটির ভিডিওগ্রাফি করা হবে।’
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা শ্রেয়, লোকসভা নির্বাচনের ফল কিন্তু বিজেপির পক্ষে যায়নি। অন্যদিকে ঝাড়খণ্ডেও কংগ্রেস ও ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার জোট সরকারকে জোর ধাক্কা দিতে চাইছে গেরুয়া শিবির।
ফলে এই বছর সকলের চোখ রয়েছে মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের দিকে। ২০১৯ সালের শেষ বিধানসভা নির্বাচনে, অবিভক্ত শিবসেনার সঙ্গে জোটে ছিল বিজেপি। তাদের জোটই ভোটে জয়ী হলেও, ভোটের পর জোট ভেঙে বেরিয়ে গিয়েছিল শিবসেনা। কংগ্রেস এবং এনসিপির সঙ্গে মহা বিকাশ আগাড়ি জোট তৈরি করে সরকার গঠন করেছিল তারা। পরে, একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বে শিবসেনা ভেঙে বেরিয়ে যায় অধিকাংশ শিবসেনা বিধায়ক। পরে, অজিত পওয়ারের হাত ধরে ভাঙন ধরে এনসিপিতেও। বর্তমানে রাজ্যের ক্ষমতায় আছে শিন্ডের শিবসেনা, অজিত পওয়ারের এনসিপি এবং বিজেপির জোট। তবে, লোকসভা ২০২৪-এ এই পশ্চিমী রাজ্যে খুবই ভাল ফল করেছে উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা, শরদ পওয়ারের এনসিপি ও কংগ্রেস। অন্যদিকে, মহারাষ্ট্রের মতো অত বেশি না হলেও গত পাঁচ বছরে উত্তাল হয়েছিল ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিও। বিধানসভা নির্বাচনের আগে, দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার হন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর বদলে নতুন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন চম্পাই সোরেন। জামিনে জেল থেকে বেরিয়ে এসে ফের মুখ্যমন্ত্রী হন হেমন্ত সোরেন। অপমানিত বোধ করায়, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা ছেড়ে, ছেলেকে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন চম্পাই। দুর্নীতির পাশাপাশি, ভোট ব্যাঙ্কের স্বার্থে হেমন্ত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের মদত দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ বিজেপির। এই ভাবে আদিবাসী অধ্যুষিত রাজ্যের জনবিন্যাস বদলে যাচ্ছে বলে অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের। ঝাড়খণ্ডের নাগরিকদের জাতীয় নিবন্ধন চালু করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা, মধ্য প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের মতো বড় নেতাদের দিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে।