মঙ্গলবার অনন্য দৃশ্যের সাক্ষী থাকল শহর কলকাতা। জোড়া কার্নিভাল। একটি রেড রোডে পুজোর কার্নিভাল। অন্যটি সেখান থেকে অনতিদূরে ‘দ্রোহের কার্নিভাল’। রানি রাসমণি রোডে বিকাল সাড়ে চারটে থেকে এই প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দেয় ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স’। পুজোর কার্নিভালের মাঝেই ধর্মতলায় প্রতিবাদের কার্নিভালে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে মানুষের ভিড়। যেদিকে চোখ যায় জনস্রোত।দলে দলে মানুষ যোগ দেন মানববন্ধনে। প্রায় সকলেরই হাতে রয়েছে প্ল্যাকার্ড। মুখে একটাই স্লোগান, ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’। সময়ের সঙ্গে ক্রমশই যেন শক্তি বাড়তে থাকে ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের।
এই প্রতিবাদের ধ্বনিতেই মঙ্গলবার সন্ধেয় ফের কেঁপে উঠল রাজপথ। দ্রোহের কার্নিভালে মঙ্গলবার সন্ধ্যা হতে না হতেই অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে গোটা ধর্মতলা চত্বর। তা সামাল দিতে ধর্মতলায় যান ডিসি সেন্ট্রাল ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। এরপরই তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভও দেখাতে থাকেন প্রতিবাদীরা। তাঁকে দেখে ‘হায় হায়, গো ব্যাক’ স্লোগান দিতে দিতে ফেটে পড়েন বিক্ষোভকারীর।
সূত্রের খবর, শুরুতেই যে এলাকায় মানববন্ধন গড়ে তোলা হয় সেখানে যান নিয়ন্ত্রণ করতে যান ইন্দিরা দেবী। তখনই তিনি বিক্ষোভের মুখে পড়েন। যদিও যে মুহূর্তে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয় তার কিছু সময়ের মধ্যেই এগিয়ে আসেন অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকেরা। ফলে সব মিলিয়ে তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। যদিও শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে হয় পুলিশকেই। তবে কিছু সময়ের মধ্যে ফের ওই এলাকায় ফিরে যান ডিসি সেন্ট্রাল।
প্রসঙ্গত, দ্রোহ কার্নিভালে যোগ দিতে আসা মানুষদের চাপে এদিন বিকাল থেকেই কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে যায় ড্রোরিনা ক্রসিং চত্বর। পদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে ওই এলাকায় যান ডিসি সেন্ট্রাল। কথা বলেন জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে। রাস্তা থেকে যাতে অবরোধ সরানো যায় সে বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। জুনিয়র চিকিৎসকেরাও জনতার কাছে ওই এলাকা ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাতে থাকেন। কিন্তু ইন্দিরা দেবীকে দেখা মাত্রই ক্ষোভে ফেটে পড়ে জনতা।
অন্যদিকে দ্রোহের কার্নিভালে অপর্ণা সেন। অনশন মঞ্চ থেকে স্লোগান দিলেন ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’! ছিলেন চৈতি ঘোষাল, উষসী চক্রবর্তীও। এর পাশাপাশি মঙ্গলবার তাঁদের অনশনমঞ্চে যোগ দিলেন আরও দুই জন। ফলে ধর্মতলার অনশনমঞ্চে অনশনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৭। পাশাপাশি, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের এক জন জুনিয়র ডাক্তারও ‘আমরণ অনশন’ করছেন।