রাত পোহালেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। আর এই পঞ্চায়েত ভোটে নিরাপত্তার কথা ভেবেই নিয়ে আসা হচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। রাজ্যে বিভিন্ন এলাকায় হিংসার ঘটনার উদাহরণ টেনে প্রতি বুথে অন্তত হাফ সেকশন অর্থাৎ চার জন সক্রিয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান মোতায়েন করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয়বাহিনী মোতায়েনের ভারপ্রাপ্ত কোঅর্ডিনেটর এবং বিএসএফের আইজি। একইসঙ্গে এ প্রস্তাবও দিয়েছিলেন যে রাজ্য পুলিশকেও পাহারায় থাকতে হবে। অবশেষে শুক্রবার বাহিনী দেওয়া সেই সমস্ত প্রস্তাব মেনে নিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
ফলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এই শেষ মুহূর্তের সিদ্ধান্তের জেরে শনিবার সমস্ত বুথে অন্তত চার জন সক্রিয় কেন্দ্রীয় জওয়ান থাকবে। তার পাশাপাশি থাকবে রাজ্য পুলিশও। বুথ দখল বা সম্ভাব্য হিংসা এড়িয়ে সুষ্ঠু ভোটের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত বলে একটি বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করা হয় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে।
আইজি বিএসএফ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোঅর্ডিনেটরের প্রস্তাব ছিল, প্রতি বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি রাজ্যপুলিশও মোতায়েন করতে হবে। ভোটগ্রহণ কেন্দ্র পিছু এক বা একাধিক বুথ থাকতে পারে। কখনও কখনও একটি ভোট গ্রহণ কেন্দ্রের অধীনে ৭-৮টি বুথও থাকতে পারে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোঅর্ডিনেটর জানিয়েছিলেন, বাহিনীর জওয়ানদের নিরাপত্তার স্বার্থেই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে একটি এবং দু’টি বুথ থাকলে কমপক্ষে হাফ সেকশন বাহিনী অর্থাৎ ৫ জন জওয়ান রাখতে হবে। যার মধ্যে সক্রিয় থাকবেন চার জন। এছাড়া, একটি ভোট কেন্দ্রে তিন-চারটি বুথ থাকলে কমপক্ষে এক সেকশন বাহিনী, পাঁচ-ছ’টি বুথ থাকলে কমপক্ষে দেড় সেকশন বাহিনী এবং সাতটি বা তার বেশি বুথ থাকলে অন্তত দু’সেকশন বাহিনী, যেখানে সক্রিয় থাকবেন ১৬ জন জওয়ান মোতায়েন করতে হবে। এ ছাড়া ‘স্ট্রংরুম’ অর্থাৎ যেখানে ব্যালটবাক্স বা ইভিএম রাখা হয়, সেখানে এক কোম্পানি বাহিনী অর্থাৎ ৮০ জন সক্রিয় জওয়ান মোতায়েন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল বাহিনীর কোঅর্ডিনেটরের তরফে। এই প্রসঙ্গে কো-অর্ডিনেটরদের যুক্তি ছিল, বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের যা অবস্থা, তাতে জওয়ানদেরও ‘প্রাণহানির আশঙ্কা’ রয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। এই মর্মে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কমিশনের সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কোঅর্ডিনেটরদের। বৈঠকে যা সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তার ভিত্তিতেই এই প্রস্তাব রাখা হচ্ছে। অবশেষে বহু টালবাহানার পর শুক্রবার এই প্রস্তাব মেনে নিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন।