গত মঙ্গলবার পুজো কার্নিভালের সময় রেড রোড থেকে আটক করা হয়েছিল কলকাতা পুরনিগমের চিকিৎসক তপোব্রত রায়কে। যা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা যায় কলকাতা পুরনিগমের চিকিৎসকদের। তবে ঘটনার পর চার দিন কেটে গেলেও স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ তথা কলকাতা পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ একবারের জন্যও খোঁজ নেননি তপোব্রতর। এমনকি ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে একবার ফোনও করেননি। শনিবার কলকাতা পুরনিগমের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুব্রত রায়চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে আসার পর এমনটাই জানান তপোব্রত রায়।
প্রসঙ্গত, ‘শিরদাঁড়া বিক্রি নেই’ লেখা টি-শার্ট পরে কার্নিভালে যোগ দেওয়ার জন্য ময়দান থানার পুলিশ চিকিৎসক তপোব্রত রায়কে আটক করে। প্রশ্ন উঠছে, একজন চিকিৎসককে এভাবে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হলেও কেন তিনি যে বিভাগের কর্মরত, সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ কেন খোঁজ নিলেন না, সেটা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতার কারণেই কি তিনি নিজের বিভাগের চিকিৎসকের কাছে সামান্য খোঁজ নিতে পারলেন না, তা নিয়ে জল্পনা চলছে কলকাতা পুরনিগমের অন্দরমহলে। যদিও অতীন ঘোষ এ ব্যাপারে সরকারিভাবে কিছু না জানালেও শুধু বলেছেন, সোমবার চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি যা বলার বলবেন। তবে বিভাগীয় মেয়র পারিষদের ভূমিকা নিয়ে কিছুটা হলেও আক্ষেপ চিকিৎসকদের। এদিকে সূত্রে খবর, গত দু’দিন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দেখা না পেলেও এদিন সুব্রত রায়চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করেন তপোব্রত রায়, দ্বৈপায়ন মজুমদার সহ পুরসভার অন্য চিকিৎসকরা। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে নিজেদের ক্ষোভের কথা তুলে ধরেন চিকিৎসকরা। সূত্রের খবর, সুব্রতবাবুর কাছে চিকিৎসকরা বলেন, যেভাবে অন্যায় এবং চক্রান্ত করে অন ডিউটিতে থাকা একজন চিকিৎসককে গ্রেফতার করা হল, তাতে তাঁরা অপমানিত হয়েছেন। এমন কোনও দোষ করেননি, যে কারণের জন্য পুলিশকে গ্রেফতার করতে হবে। অথচ কলকাতা পুরনিগমের তরফে কোনওরকম আপত্তি বা নিন্দা প্রস্তাব এখনও পর্যন্ত সরকারিভাবে জানানো হয়নি। এটাই মূলত ক্ষোভের কারণ চিকিৎসকদের। এছাড়াও পুলিশ যাতে নিঃশর্ত ক্ষমা চায়, এই ঘটনার জন্য এবং চিকিৎসকদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা পুরনিগম যাতে পর্যাপ্তভাবে করে, সেই বিষয়টিও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে তুলে ধরেন চিকিৎসকরা।
তবে শনিবার দীর্ঘ দুই ঘণ্টার বেশি বৈঠক করেন চিকিৎসকরা। বেরিয়ে এসে দ্বৈপায়ন মজুমদার, মানস সোমরা জানান, ‘গোটা ঘটনাটি এখন বিচারাধীন। আমরা গোটা বিষয়টি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নজর এনেছি। তবে ভেতরে কী আলোচনা হয়েছে, সেটা আমরা বাইরে বলব না। তবে যেভাবে অন্যায় হয়েছে আমাদের একজন চিকিৎসকের সঙ্গে, তা ভবিষ্যতে যেন না হয় সে ব্যাপারে পুরনিগমকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’