উৎসবের মরশুমে অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে সোশাল মিডিয়ায় এবার কড়া নজরদারি রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের। এর পাশাপাশি এই ইস্যুতে নিজেদের ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকেও সতর্ক করতে দেখা গেল লালবাজারকে। কালীপুজো নিয়ে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠকে কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা জানান, ‘কালীপুজো ও দীপাবলিতে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না বলে আমরা আশাবাদী। তবুও আমরা সবদিকে সতর্ক রয়েছি। গত কয়েকদিন ধরে কিছু কিছু ঘটনা আমরা দেখছি। সোশ্যাল মিডিয়াতেও নজরদারি চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে সমাজমাধ্যমে নজরদারি চালিয়ে অনেক কিছু পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। সেসব ব্যাপারে এখনই বিস্তারিত কিছু বলতে চাইছি না। কলকাতা পুলিশের সমস্ত ইউনিটকে সেসব ব্যপারে সতর্ক করা হয়েছে। আমাদের ইন্টেলিজেন্স শাখাকে আরও সক্রিয় করা হয়েছে। কোথাও বিশৃঙ্খলার খবর পেলে পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।’
এদিকে রাজ্যে অশান্তি ছড়ানোর একটা চক্রান্ত চলছে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন। দুর্গাপুজোর সময়ও তা লক্ষ করা গিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিষয়টি নিয়ে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের সতর্কও করেন। এদিকে শুক্রবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘দুর্যোগের সুযোগে কেউ কেউ দুষ্টুমি করতে পারে, অশান্তির ছক হতে পারে। দাঙ্গার একটা পরিস্থিতি হয়েছিল। পুলিশ, গোয়েন্দাদের খুব সতর্ক থাকতে হবে। সামনে কালীপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো। কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে।’
উল্লেখ্য, দুর্গাপুজোর সময় হাওড়ায় গ্রামীণে একটি ঘটনা ঘটেছিল। ওই ঘটনা নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। এ দিন সিপি হাওড়ার ঘটনার প্রসঙ্গে টেনে সতর্ক করেন পুজো উদ্যোক্তাদেরও। পাশাপাশি, সাইবার প্রতারণা নিয়েও শহরবাসীকে এদিন সচেতন করেন নগরপাল। তিনি জানান, উৎসবের সময় অনলাইনে কেনাকাটা করে থাকেন। অনলাইনে শপিং করতে গিয়ে অনেকেই সাইবার প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। অনলাইন কেনাকাটায় সচেতন আরও সচেতন হতে হবে। সাইবার প্রতারণার শিকার হলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করতে হবে।
এদিকে, কালীপুজোয় নিষিদ্ধ বাজি রুখতে পুলিশ কঠোর মনোভাব নিয়েছে তাও জানান নগরপাল। স্পষ্ট ভাষায় তিনি জানান যে, নিষিদ্ধ বাজি রুখতে ধড়পাকড় চলছে পুলিশের। এদিন সিপি বলেন, নিষিদ্ধ বাজি যিনি বিক্রি করবেন এবং যিনি কিনবেন উভয়ের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। একমাত্র পরিবেশবান্ধব বাজি ব্যবহার করা যাবে। নিষিদ্ধ বাজি রুখতে পুজো উদ্যোক্তাদেরও সচেতন হতে নির্দেশ দেন। কালীপুজোয় বাজি ফাটাতে গিয়ে অনেক সময় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। দেখা যায় ঘটনার সময় দমকল ও অ্যাম্বুল্যান্স প্রবেশ করতে পারে না। দমকল ও অ্যাম্বুল্যান্সের প্রবেশ পথে যাতে কোনও বাধা না থাকে পুজো আয়োজকদের সেদিনে নজর রাখতে বলা হয়েছে।