আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও শহর কলকাতায় বিক্রি বন্ধ হয়নি গুটখা আর পানমশলা

বেশ কয়েক বছর আগে আদালত থেকে গুটখা ও পানমশলা বিক্রি নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এ ব্যাপারে জনসাধারণকে অবহিত করতে প্রতি বছর নিয়ম করে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করে সরকার। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা থোড়াই কেয়ার করেন বিক্রেতা থেকে আমজনতা। কারণ, কলকাতাসহ রাজ্যের সর্বত্র প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে গুটখাপানমশলা। তার জেরে এক দিকে যেমন মানুষ ক্যান্সারসহ বিভিন্ন কঠিন রোগের শিকার হচ্ছেন, ঠিক তেমনই গুটখার পিকে শহরের রাস্তাঘাট নোংরা হচ্ছে, দৃশ্যদূষণ ঘটছে।

এদিকে গুটখা ও পানমশলা বিক্রি বন্ধে রাজ্য স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ দফতরের তরফে ফের নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ২০১১র কেন্দ্রীয় খাদ্যসুরক্ষা বিধি অর্থাত্ ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস রেগুলেশন) অনুযায়ী এই নিষেধাজ্ঞা। আগামী ৭ নভেম্বর থেকে এই নির্দেশ কার্যকরী হবে। কেন্দ্রীয় খাদ্যসুরক্ষা বিধিতে যে সব বস্তুকে ক্ষতিকারক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম তামাক বা নিকোটিনযুক্ত গুটখা ও পানমশলাএ ব্যাপারে রাজ্য ফুড সেফটি কমিশনারের অফিস থেকে প্রতি বছরই এক বার করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় এ নিয়ে। কপি পাঠিয়ে দেওয়া হয় সব পুরকর্তৃপক্ষ, জেলার এসপি এবং ডিএমদের কাছে। এরপরও ছবি এতটুকু বদলায়নি। বিক্রি বন্ধ হয়নি গুটখা ও পানমশলার। সবথেকে মজার ঘটনা হল, খোদ কলকাতা পুরভবনের সামনে দোকানে ঝুলছে গুটখাপানমশলার প্যাকেট। এসএসকেএম, কলকাতামেডিক্যালকলেজেরগেটেরসামনেওদেদারবিক্রিহচ্ছেনিষিদ্ধতামাকজাতীয়নেশারদ্রব্য। অন্যদিকেগুটখারপিকেহাওড়াব্রিজেরক্ষতিহওয়ায়তারেরজালপর্যন্তবসাতেহয়েছে।

নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও গুটখা ও পানমশলা বিক্রি বন্ধ করা যাচ্ছে না কেন এ ব্যাপারে ফুড সেফটি বিভাগের দায়িত্বে থাকা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, নোডাল এজেন্সি হিসেবে স্বাস্থ্য দপ্তর গুটখাপানমশলা বিক্রি বন্ধে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও সেটাকে বাস্তবায়িত করার দায়িত্ব পুরসভা এবং পুলিশ প্রশাসনেরই। স্বাস্থ্য দপ্তরের বিশেষ কিছু করণীয় নেই।

অন্য দিকে, লালবাজারের তরফ থেকে যে বক্তব্য রাখা হয়েছে তার সারমমর্ম, ‘স্কুল, কলেজ কিংবা হাসপাতালের সামনে গুটখা ও পানমশলা বিক্রি বন্ধে মাঝেমধ্যেই দোকান থেকে মালপত্র আটক করা হয়। যাঁরা এই সব জিনিস বিক্রি করেন তাঁরা খুবই ছোট দোকানদার। এটা পুরোপুরি বন্ধ করতে গেলে সবার আগে উৎপাদন বন্ধ করা প্রয়োজন। অন্যথায় সমস্যা রয়েই যাবে।

এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার উদ্যান বিভাগের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, ‘শহরের সৌন্দর্যায়নে কোটি কোটি টাকা খরচ করে ফুটপাথের রেলিং, রাস্তার মিডিয়ান স্ট্রিপ রং করা হচ্ছে। লোকে তার উপরেই পানমশলা, গুটখার পিক ফেলছেন। বিশেষ করে যে সব সিগন্যালে গাড়ি দাঁড়ায় তার পাশে মিডিয়ান স্ট্রিপগুলি পানের পিকে ভরে যাচ্ছে। তার জন্যে ঘন ঘন রং করতে হয়। খরচও বেড়ে যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

6 − two =