সামাজিক মাধ্যমে ইঙ্গিতবাহী পোস্ট তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের। জন্মদিনের আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করেন কুণাল ঘোষ।এই পোস্টে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘ভাবী মুখ্যমন্ত্রী ’হিসাবে সম্বোধন করতে দেখা যায় কুণাল ঘোষকে।
কুণাল তাঁর পোস্টে লেখেন, ‘অভিষেকের সুস্থতা কামনা করে কুণাল লেখেন, ‘রাত পোহালেই অভিষেকের জন্মদিন। খুব ভালো থাকুক, সুস্থ থাকুক, চোখের সমস্যাটা একদম ঠিক হয়ে যাক।’ সঙ্গে এও লেখেন, ‘কম বয়সেই যোগ্য নেতৃত্বের যে ছাপ অভিষেক রাখছে, সময়ের সঙ্গে তা আরও ব্যাপকতর হতে থাকুক।’ জানিয়েছেন, ‘আমি নিজে সক্রিয় রাজনীতিতে থাকি বা না থাকি, এই উদীয়মান তারকার উপর গুরুত্ব–সহ নজর রাখবই। বয়সে ছোট, কিন্তু যতদিন আমি তৃণমূলে সক্রিয় থাকব, ও আমার নেতা। তার বাইরে স্নেহ করি, ভালোবাসি।’ এর পাশাপাশি কুণাল তাঁর পোস্টে এও লেখেন, কুণাল ঘোষ দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলে রয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের রাজনৈতিক জীবন খুব কাজ থেকে দেখেছেন তিনি। সেকথাও এদিনের পোস্টে তুলে ধরেন কুণাল। অভিষেকের আমলে দলে কী কী পরিবর্তন এসেছে, সে বিষয়ের উল্লেখও করেছেন। সঙ্গে এও লিখেছেন, ‘মমতাদিকে দীর্ঘকাল দেখেছি, এখন অভিষেককেও দেখছি। দ্রুত আরও পরিণত। আবেগের সঙ্গে মিশছে আধুনিক পদ্ধতি, প্রযুক্তি। আরও ধারালো হচ্ছে অভিষেক।’ এর পরই তাঁর আশা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসবেন অভিষেক। তৃণমূলেরও দায়িত্ব নেবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। এ প্রসঙ্গে পোস্টে কুণাল ঘোষ লিখেছেন,’সময়ের নিয়মে মমতাদির পর একদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হবে অভিষেক, তৃণমূল কংগ্রেসের সেনাপতি থেকে যুগান্তরের পতাকায় কান্ডারী।মমতাদির ঘরানার সময়োপযোগী ধারক ও বাহক। মমতাদির নেতৃত্ব চলতে থাকুক, আর তার মধ্যেই আগামীর পদধ্বনি হতে থাকুক বাংলার রাজনৈতিক সামাজিক চালচিত্রে।’
এদিকে বৃহস্পতিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিনের আগে দলের গুরুত্বপূর্ণ এক নেতার এহেন পোস্ট নিঃসন্দেহেই তাৎপর্যপূর্ণ, বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরাই। অবশ্য এই প্রথম নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরসূরি হিসাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা এর আগেও এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছিলেন কুণাল ঘোষ। সাংবাদিক সম্মেলনের মধ্য দিয়েও সেই একই বার্তা দিতেদেখাগেছেতাঁকে।
এদিকে কিছুদিন আগেই কেতুগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক শেখ শাহনাওয়াজ মণ্ডল অভিষেককে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সম্বোধন করেন। বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চে বিধায়কের এই মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধে। এছাড়াও মাঝেমধ্যে একাধিক তৃণমূল নেতার মুখে একথা শোনা গিয়েছে। যদিও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিজের রাজনৈতিক উত্তরসূরি হিসাবে নিজেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, আলাদা করে কুণাল ঘোষকে বারবার একথা উল্লেখ করতে হচ্ছে কেন তা নিয়ে। আর এখানেই প্রশ্ন, তাহলে কি দলের মধ্যেই এই নিয়ে কারোর মনে কোনও ধন্দ রয়েছে? এদিকে এই ইস্যুতে তৃণমূলে আদি ও নব্য নেতাদের মধ্যে যে সমান্তরাল একটি সমীকরণ রয়েছে, তা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কাছে অজানা নয়। এই নিয়ে যদিও কোনও তৃণমূল নেতৃত্বের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
তবে বিজেপি নেতা সজল ঘোষ কুণালকে বিদ্ধ করে জানান, ‘আর বেশি তেল দিলে অভিষেক পা হড়কে পড়ে যাবেন। এ বড় বিদূষক! তৈলমর্দন করেই জীবন বাঁচে। ২৬–এর পর হতে পারলে হয়ে দেখাক!’