দেশের মধ্যে তিনবার ‘নিরাপদ শহরের’ তালিকার শীর্ষে থেকেছে কলকাতা। কিন্তু আরজি করের ঘটনা মহানগরের সেই ‘ইমেজ’ কিছুটা ক্ষুণ্ণ করেছে। শুধু তাই নয়, গত তিন মাসে আরও কিছু অপ্রীতিকর ঘটনার সাক্ষী থেকেছে তিলোত্তমা।
এরই প্রেক্ষিতে মেয়েদের মা–বাবারা চাইছেন, নিরাপত্তার স্বার্থে বছরভর আত্মরক্ষার পাঠ দিক প্রশাসন বা কলকাতা পুলিশ। অন্যদিকে পুলিশ–প্রশাসন চাইছে, আত্মরক্ষার স্বার্থে চালু ‘সুকন্যা’ প্রকল্পকে রাজ্যের প্রতিটি স্কুলে পৌঁছে দিতে। শুধু তাই নয়, স্কুল জীবনে যারা এই প্রকল্পে ট্রেনিং নেবে, ভবিষ্যতে পুলিশের চাকরিতে তারা অগ্রাধিকার পেতে পারে বলে মনে করছেন পুলিশ কর্তারা।
২০১৪–য় ‘সুকন্যা’ প্রকল্পের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্দেশ্য, স্কুল ও কলেজের মেয়েদের আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ দেওয়া। সরকারি স্কুলে সাধারণত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রীদের ক্যারাটে, তাইকোন্ডো, মার্শাল আর্ট এবং কিক–বক্সিং শেখানো হয়।
ক্লাসের সময়ে দক্ষ প্রশিক্ষকদের নিয়ে যাওয়া হয় স্কুলে। বছরের নির্দিষ্ট সময়ে মাস তিনেক এই প্রশিক্ষণ চলে। প্রথম দিকে এই প্রকল্প শুধু কলকাতা পুলিশের এলাকায় শুরু হলেও, পরে বেশ কিছু পুলিশ কমিশনারেটে ‘সুকন্যা’ চালু হয়। এ বছর এই সুকন্যা প্রকল্পের মুকুটে ‘স্কচ’ অ্যাওয়ার্ডের পালকও জুড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে অভিভাবকদের আবেদনকে মাথায় রেখে কলকাতা পুলিশও চাইছে, যত বেশি স্কুলে মেয়েদের প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়, ততই ভালো। এ বছর কলকাতারই প্রায় আড়াইশো স্কুলের তরফে লালবাজারের কাছে প্রশিক্ষণের জন্য আবেদন এসেছে বলে জানান এক পুলিশকর্তা।
এদিকে সূত্রের খবর, এ ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে সেন্ট জ়েভিয়ার্সের মতো স্কুলও। সরকারি স্কুলের পাশাপাশি বেসরকারি স্কুলের আবেদনেও সাড়া দিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে সমস্যা নেই বলে জানিয়েছে লালবাজার।
এমনিতে ব্যক্তিগত ভাবে ওই প্রশিক্ষণ নিতে গেলে, অনেক খরচ। তবে এই বিপুল খরচ বহন করা সাধ্য যে সবার নেই তাও জানিয়েছেন পুলিশ কর্তারা।
একইসঙ্গে তাঁরা এও জানাচ্ছেন, ‘এখন যা পরিস্থিতি, তাতে ফাইভ থেকেই আত্মরক্ষার পাঠ দেওয়া প্রয়োজন। এ জন্য কিছু খরচ করতে হলেও করব। প্রশিক্ষণ নেওয়া থাকলে হয়তো আরজি করের মতো ঘটনার মোকাবিলা করতে পারবে ওরা।’