১ কোটি ৭২ লক্ষ মানুষকে দরিদ্র সীমার উপরে আনতে পেরেছিঃ মমতা

শেষ হল অষ্টম বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। দু’দিনব্যাপী এই বাণিজ্য সম্মেলনের এদিন সমাপ্তি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন দেশ-বিদেশের একাধিক শিল্পপতি। ৮ ম বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন ২০২৫ দারুণ সফল হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বৃহস্পতিবার ৫ দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৪ লক্ষ কোটির বেশি লগ্নি প্রস্তাব এসেছে বলে জানান তিনি। মুখ্য়মন্ত্রী বলেন, ‘এই সম্মেলনে ২১২ মউ স্বাক্ষর হয়েছে। আমাদের টিমের নিরলস প্রচেষ্টা ও এনারজেটিক কাজে। গত সাত বারে ১৯ লক্ষ কোটি বিনিয়োগ হয়েছিল। যার মধ্যে ১৩ লক্ষ কোটির কাজ হয়েছে। বুধবার প্রচুর বিনিয়োগ হয়েছে। শুধু মুকেশ আম্বানিই একা অনেক বিনিয়োগ করেছেন। আবার করবেন আমাকে একান্ত বৈঠকে বলেছেন। সজ্জন জিন্দালও জানিয়েছেন। আমি খুশি যে ৪ লক্ষ ৪০ হাজার ৫৯৫ কোটির প্রস্তাব এল। এছাড়া আরও বিনিয়োগ আসছে।’

একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘বিজিবিএস প্রদর্শনী চলছে, যেখানে নানা রাজ্য ও দেশের মানুষ আছেন। এখানে এক্সিবিশন সেন্টার, কনভেনশন সেন্টার, ক্ষুদ্র থেকে বড় শিল্প, পর্যটন থেকে স্বাস্থ্য, শিক্ষা থেকে কৃষি সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা মানুষকে আলাদা করি না। আমরা মন্দির, মসজিদ, গির্জা। আমরা হিন্দু, মুসলমান-সহ সব ধর্ম ও মানুষকে ভালবাসি। বাংলা হল কালচারাল ক্যাপিটাল দেশের। আমরা সকলকে নিয়ে চলতে ভালবাসি।’

বাণিজ্য সম্মেলনের শেষদিনে মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান, ‘বাংলা হল সুরক্ষিত ও স্মার্ট। এখানেই শিল্পের আগামী গন্তব্য। আনন্দ সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিন। তাহলে উপভোগ করতে পারবেন। না হলে কাঁদবেন। এখন থেকে কাজ করুন। আগামী শিল্প সম্মেলনের জন্য।’

বাংলায় বিনিয়োগে আহ্বান জানিয়ে বুধবারই মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘এবারের বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলন অনেক আকারে বড়। ২০০ বেশি বিদেশি প্রতিনিধি এখানে আছেন। এটাকে আপনারা আপনাদের সুইট হোম ভাবুন। বাংলাকে ভুলবেন না। বাংলা আপনাকে ভুলবে না।’ বৃহস্পতিবারের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর উদাত্ত কণ্ঠ, ‘মহিলা কর্মসংস্থানে আমরা এগিয়ে। আমাদের একাধিক সামাজিক প্রকল্প সাধারণ মানুষকে সুবিধা দিয়েছে। আমাদের সাফল্য আমরা ১ কোটি ৭২ লক্ষ মানুষকে দরিদ্র সীমার উপরে আনতে পেরেছি।’

এর আগে বুধবার বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের (বিজিবিএস) মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, বুধবার ‘লাকি’ ডে। তাই এদিন-ই তিনি দেউচা পাঁচামিতে খননের কাজ শুরুর ঘোষণা করলেন। যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে ব্যাসল্ট খননের কাজ শুরু হয়েছে। তাঁর দাবি, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লাখনি হল দেউচা পাঁচামি। আর সেই কয়লাখনির কারণে ১০০ বছরে বিদ্যুতের কোনও সমস্যা হবে না। দেখা দেবে না বিদ্যুতের সংকট।

বাংলাকে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার গেটওয়ে বলে দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী দিনে বাংলা দেশের এক নম্বর শিল্প বিনিয়োগের জায়গা হবে। এমএসএমই থেকে মহিলা কর্মসংস্থান-সবেতে আমরা এক নম্বরে। বাংলায় দক্ষ শ্রমিক পাওয়া যায়। আমরা কেন বাণিজ্য সম্মেলন করেছিলাম? অনেকে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। আজ তাঁরাই আমাদের দেখে এরকম বাণিজ্য সম্মেলন করছেন। আমরা যুবদের জন্য এটা করছি। আমরা কর্মসংস্থান গড়ছি। তাই এই সম্মেলন সাধারণ মানুষের। আমার সরকার সাধারণ মানুষের। বাংলায় পুনরায় বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’ বাংলায় জমি জট নেই বলে দাবি করে তাঁর সরকারকে শিল্পবান্ধব বলেও দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 3 =