উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের সরকারি নিয়ন্ত্রণাধীন গুদাম থেকে বই চুরির ঘটনায় নতুন করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের। একইসঙ্গে এ নির্দেশও দেওয়া হয়েছে, তিন মাসের মধ্যে এই তদন্ত শেষ করতে হবে রাজ্য গোয়েন্দা দফতরকে। একইসঙ্গে জেলাশাসককে সব রকমভাবে সহযোগিতা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র গুদামের দু’জন চুক্তিভিত্তিক নিরাপত্তারক্ষীর পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব না। এর পিছনে বড় কোনও চক্র থাকতে পারে বলেও বৃহস্পতিবার মন্তব্য করতে শোনা যায় প্রধান বিচারপতিকে।
এদিকে আদালত সূত্রে খবর, রাজ্যের তরফে এ দিন জানানো হয়, ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের জন্য ২,৭৬,২৭৫ টি বই পাঠানো হয়। ১, ৯৯,০৭৫ টি বই চুরি যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। পরে গুদাম থেকে ৪০,৮৪৫ টি বই পাওয়া যায়। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী মোট ১,৫৮,২৩০ টি বই খোয়া গিয়েছে। একই সঙ্গে রাজ্য এদিন এও জানায়, সমস্ত পড়ুয়া বই পেয়েছে।
এরপরই প্রধান বিচারপতি জানতে চান, কারা বই চুরি করেছে সে ব্যাপারে। উত্তরে রাজ্য জানায়, গুদামের দুজন চুক্তিভিত্তিক নিরাপত্তাকর্মীর নাম চার্জশিটে আছে। এরপর প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, এরা হয়ত গুদাম খুলে প্রক্রিয়াটা শুরু করেছে। কিন্তু এর পিছনে অন্য কেউ আছে। সঙ্গে এও বলেন, ‘১ লাখ ৫৮ হাজার বই অটো – রিকশা করে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না। কমপক্ষে দুটি ট্রাক লাগবে। আমার মনে হয় এই দুজনকে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে।’ এখানেই শেষ নয়, রাজ্যকে বিদ্ধ করে তিনি এও বলেন, ‘এরা বিচার প্রক্রিয়ার সময় এটা বলতেই পারে যে ওইদিন কিছু লোক এসে আমাদের মেরে অজ্ঞান করে চাবি নিয়ে লুঠ করে চলে গিয়েছে।’ আর এখানেই প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, তখন রাজ্য কী করবে?
উল্লেখ্য, সরকারি গুদাম থেকে প্রাথমিকের তিন কোটি টাকার বই চুরির অভিযোগ। পড়ুয়াদের বিনামূল্যে দেওয়ার জন্য বরাদ্দ ২ লাখ বই চুরি সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন গুদাম থেকেই। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে ইসলামপুরের সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন গুদাম থেকে চুরি হয় বই। এফআইআর দায়ের হয়। এই ঘটনায় গ্রেফতার দু’জন গ্রেফতার হয়। তারা এই মুহূর্তে জামিনে রয়েছেন। ২০২৪ সালে চার্জশিট দাখিল হয়। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে এবং উপযুক্ত তদন্ত চেয়ে দায়ের হয় জনস্বার্থ মামলা।