পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বারবার দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফ থেকে দেওয়া হয়েছিল হুঁশিয়ারি। ভোটের আগের দিন পর্যন্তও দল থেকে বহিষ্কারের চিঠি গিয়েছে জেলায় জেলায়। তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, বারবার বলেছেন, নির্দল ফেরাবেন না। অথচ গণনাপর্ব মেটার আগেই দলে ফিরলেন তৃণমূল সমর্থিত নির্দল প্রার্থী। স্থানীয় নেতারা ‘সগর্বে’ বরণ করে নিলেন জয়ীদের। জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ি ব্লকের এমন ঘটনায় প্রশ্ন উঠে গেল, তাহলে কী পুরোটাই কথার কথা!
এদিকে নবজোয়ার কর্মসূচি থেকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন, দলের প্রতীকে ভোটে দাঁড়ানো প্রার্থীকে হারাতে কেউ যদি নির্দল-কাঁটা হন, তাহলে দল তাঁকে উপড়ে ফেলবে। দলের শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে হারাতে হবে তৃণমূলের আশ্রয়ও। অথচ দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশকে কার্যত বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়েই মঙ্গলবার মান অভিমান মুছিয়ে দলে ফেরানো হল ময়নাগুড়ি ব্লকের মাধবডাঙা-২ গ্রামপঞ্চায়েতের নির্দল প্রার্থী নমিতা রায়কে।
মাধবডাঙার ১৬/২১৮ নম্বর বুথে নির্দল প্রার্থী হিসাবে লড়াই করেছেন নমিতা রায়। মানুষের সমর্থন পেয়ে ভোটে জিতেওছেন তিনি। এরপর বেলা গড়াতেই দেখা যায় তাঁকে দলে ফিরিয়ে নিচ্ছেন স্থানীয় নেতৃত্ব। হাতে তৃণমূলের পতাকাও তুলে দেওয়া হয়। নমিতার পাশাপাশি তাঁর স্বামীর হাতেও ঘাসফুলের ঝাণ্ডা। এমনও সূত্রের দাবি, পরে এলাকায় বিজয় মিছিলও করেন তাঁরা।
এদিকে মাধবডাঙায় ১৬টি আসন। এখানে বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ৮। তৃণমূল ৭। নির্দল জিতেছে ১টি আসনে। এখন নমিতা তৃণমূলে ফেরায় ৮-৮ হয়ে গেল পঞ্চায়েত। নমিতার দাবি, তিনি তৃণমূলের একনিষ্ঠ কর্মী। কিছুটা মনের অমিল হওয়ায় নির্দল প্রতীকে লড়েন। এদিন ভোটে জিতে সেসব মনোমালিন্য ঘুচিয়ে দলে ফিরলেন বলেই দাবি করা হল জয়ী প্রার্থী এবং তৃণমূল উভয়ের তরফ থেকেই। তবে ময়নাগুড়ি-২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি শিবশঙ্কর দত্তের বক্তব্য, যা সিদ্ধান্ত স্থানীয় নেতৃত্ব নিয়েছে। জেলা নেতৃত্বকে বিষয়টি জানাবেন তাঁরা। এরপর যা বিবেচনা করার তারাই করবে।