সিরিয়ার গির্জায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় মৃত্যু হল অন্তত ২০ জনের। আহত ৫০ জনের বেশি। রবিবার সিরিয়ার দামাস্কাসের উপকণ্ঠে ডোয়েলায় মার ইলিয়াস গির্জার ভিতরে লোকেরা প্রার্থনা করার সময় ওই বিস্ফোরণ ঘটে। হামলায় মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা সেখানকার প্রশাসনের। এই হামলার জন্য ইসলামিক স্টেস্টকে দায়ী করছে সিরিয়ার সরকার। সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, রবিবার সেখানকার রাজধানী দামাস্কাসের কাছে ডোয়েলা এলাকার মার ইলিয়াস গির্জায় আত্মঘাতী হামলা চালায় একজন। ডায়েশ (আইএস) সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ওই ব্যক্তি গির্জায় প্রবেশ করে। এরপর ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পরে, শরীরে বেঁধে রাখা বিস্ফোরণ দিয়ে নিজেকে উড়িয়ে দেয়। সিরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বিবৃতিকে উদ্ধৃত করে সিরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা সানা (এসএএনএ) জানিয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে আহতদের চিকিৎসার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, এই হামলায় নিহতদের মধ্যে কয়েকজন শিশুও আছে।
গত কয়েক বছরের মধ্যে এই ধরনের হামলা প্রথম ঘটল সিরিয়ায়। দামাস্কাস যখন কার্যত ইসলামপন্থী শাসনের অধীনে সংখ্যালঘুদের সমর্থন অর্জনের চেষ্টা করছে তখনই এই হামলা ঘটল। সেখানকার রাষ্ট্রপতি আহমেদ আল-শারা যখন দেশজুড়ে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছেন, তখনই যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশটিতে চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলির স্লিপার সেলের উপস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
রবিবারের এই হামলার পরে, তাৎক্ষণিকভাবে কোনও গোষ্ঠী এই ঘটনার দায় স্বীকার করেনি। তবে সিরিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে যে ইসলামিক স্টেট গ্রুপের এক সদস্য ওই গির্জার ভেতরে প্রবেশ করে সেখানে থাকা লোকজনের উপর গুলি চালায়। তারপর বিস্ফোরণ হয় সেখানে। একই কথা জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরাও।
ওই গির্জার বিশপ মুসা খুরি জানিয়েছেন যে হামলাকারী বিকালের প্রার্থনার সময় গির্জায় একটি গ্রেনেডও ছুঁড়েছিল। এদিকে সংবাদ সংস্থা এপি সূত্রে জানা যাচ্ছে, রাওয়াদ নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ওই হামলাকারীর সঙ্গে আরও অন্তত দু’জন ছিল।
এদিকে এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সিরিয়ার তথ্যমন্ত্রী হামজা মোস্তফা। একইসঙ্গে এই ঘটনাকে জঙ্গি হামলা বলে অভিহিত করেন। পাশাপাশি এই হামলাকে ‘ কাপুরুষোচিত ’ এবং ‘নাগরিক মূল্যবোধের বিরুদ্ধে’ বলেও উল্লেখ করেন। আর যারা এই রকমের হামলা চালাচ্ছে তাদের হাত থেকে সেই দেশের নাগরিকদের রক্ষা করার জন্য সমস্ত প্রচেষ্টা চালানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন সিরিয়ার তথ্যমন্ত্রী।