মানস কবির বিরুদ্ধে থানায় হেনস্থার অভিযোগ রানি বিড়লা গার্লস কলেজের অধ্যক্ষা

রানি বিড়লা গার্লস কলেজের অধ্যক্ষা শ্রাবন্তী ভট্টাচার্যকে হেনস্থার অভিযোগের আঙুল উঠল কলেজ অধ্যক্ষদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মানস কবির বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, এই ঘটনায়   শেক্সপিয়র সরণি থানায় অভিযোগ দায়েরও করেন শ্রাবন্তী ভট্টাচার্য। থানা সূত্রে খবর, তাঁর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে জেনারেল ডায়েরি করেছে পুলিশ। লিখিত অভিযোগে মানস কবির বিরুদ্ধে হুমকি, হেনস্থা, চাপ দেওয়ার অভিযোগ করেন রানি বিড়লা গার্লস কলেজের অধ্যক্ষা।

প্রসঙ্গত,  রানি বিড়লা গার্লস কলেজে পরিচালন সমিতিতে দুই শিক্ষক সদস্যের মনোনয়ন ঘিরে গন্ডগোলের সূত্রপাত। লিখিত অভিযোগে শ্রাবন্তী ভট্টাচার্য জানা, গত ১৮ জুন অন্য কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে তাঁর কলেজে এসে তাঁকে হুমকি দেন মানস কবি। পরিচালন সমিতিতে ইলেকশন নয়, সিলেকশনের জন্য চাপ সৃষ্টি করা হয় বলে অভিযোগ।

এদিকে অধ্যক্ষা শ্রাবন্তী ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠদের দাবি, ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারির পর মানস কবি তাঁর ঘনিষ্ঠ অন্য কলেজের কয়েকজন অধ্যক্ষকে সঙ্গে নিয়ে রানি বিড়লা কলেজে বুধবার আসেন। ভোট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পদ্ধতি নিয়ে আপত্তি জানানোর পাশাপাশি এমন কিছু কথা বলা হয় যার জেরে শ্রাবন্তী ভট্টাচার্য অসুস্থ হয়ে পড়েন। পাশাপাশি তাঁরা এও জানান,  রানি বিড়লা গার্লস কলেজের হিন্দির অধ্যাপক মন্টু দাসকে পরিচালন সমিতির সদস্য করা নিয়েই গণ্ডগোলের সূত্রপাত। এই প্রসঙ্গে শ্রাবন্তী ভট্টাচার্য এও জানান, ‘ওনাকে ঢোকানোর জন্য সরাসরি না হলেও আমাকে একটা চাপ দেওয়া হয়েছিল ঠিকই। গত কয়েকদিন ধরে মানসিকভাবে চাপ তৈরি করা হয়েছিল।’ একইসঙ্গে শ্রাবন্তী ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠরা এও জানান, মন্টু দাসের বিরুদ্ধে ভুয়ো এসসি সার্টিফিকেট দাখিল করে চাকরি হাতানোর অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের নিষ্পত্তি হ‌ওয়ার আগেই মন্টু দাসকে জিবির সদস্য করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। আর সেই কারণেই পরিচালন সমিতির ইলেকশন না করে সিলেকশনের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। তাতে রাজি না হয়ে অধ্যক্ষা বুধবার পরিচালন সমিতির ভোট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার পর‌ই বুধবার কলেজের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এরপর পরিস্থিতি এমন জায়গায় যায় যে অধ্যক্ষকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।

এদিকে শ্রাবন্তীদেবী এও জানান, সিসি ক্যামেরা এড়াতে অধ্যক্ষার কার্যালয়ের পরিবর্তে অন্য ঘরে তাঁকে ডেকে নিয়ে যান মানস কবি। এই ঘটনায় পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ তিনি করেছেন তাতে এও জানান, ঘণ্টাখানেক ধরে আলোচনার নামে হেনস্থা করা হয়। শুধু তাই নয়, কথা না শুনলে চাকরি বিপদে পড়বে বলে তাঁকে হুমকিও দেন মানস কবি।

এদিকে এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে ঘটনা ১৮ তারিখে ঘটলেও এরও সাতদিন পর ২৫ তারিখে কেন  পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হল তা নিয়ে। এদিকে সূত্রে খবর, লিখিত অভিযোগপত্র সেই কারণও উল্লেখ করেছেন শ্রাবন্তী ভট্টাচার্য। সেখানে তিনি এও জানিয়েছেন, ঘণ্টাখানেক ধরে হেনস্থার শিকার হ‌ওয়ার পর‌ই অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। ফলে অভিযোগ দায়ের করার মতো শারীরিক অবস্থায় ছিলেন না তিনি। মঙ্গলবার সন্ধে অর্থাত্ ২৪ জুন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি। তারপরই বুধবার অভিযোগ দায়ের করতে থানায় পৌঁছন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × three =