কসবা কাণ্ডে বিতর্কিত মন্তব্যের জের, মদন মিত্রকে শোকজ তৃণমূলের

কসবাকাণ্ডে বিতর্কিত মন্তব্যে করার জেরে এবার কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রকে শোকজ করল তৃণমূল কংগ্রেস। সঙ্গে এও জানানো হয়েছে, তাঁকে তিনদিনের মধ্যে এই শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, মদনের বিরুদ্ধে,  দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। দলের তরফে রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘কলকাতার কসবায় আইন পড়ুয়া এক ছাত্রীর প্রতি অত্যন্ত ঘৃণ্য এবং নিদারুণ দুঃখজনক ঘটনা ঘটে গেছে। অত্যন্ত সংবেদনশীল এই দুঃখজনক পাশবিক অত্যাচারের ঘটনায় পার্টির সর্বোচ্চ নেতৃত্ব বিশেষভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং কঠোরভাবে এই ঘটনার নিন্দা করা হয়েছে। প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে। দুষ্কৃতিকারীদের দ্রুততার সঙ্গে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ব্যাপারে ২৮শে জুন ২০২৫ তারিখে আপনার অযাচিত, অপ্রয়োজনীয় এবং অসংবেদনশীল মন্তব্য আমাদের দলের ভাবমূর্তিকে যারপরনাই আঘাত করেছে। একইসঙ্গে আপনার মন্তব্য দলের কঠোর অবস্থানের বিরুদ্ধাচরণ করেছে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের এই আচরণের জন্য আপনাকে আগামী তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।‘ 

কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের এক ছাত্রীকে ক্যাম্পাসের মধ্যে গণধর্ষণ করার ঘটনায় শনিবার বেফাঁস মন্তব্য করেন তৃণমূল নেতা ও কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। যা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়। মদনের দাবি, মেয়েটি যদি কাউকে সঙ্গে করে নিয়ে যেতেন তাহলে এই ঘটনা ঘটত না। পাশাপাশি কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র এও জানান, ‘যে ঘটনা ঘটেছে তার নিন্দা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। দুনিয়ার সবচেয়ে নোংরা কাজ এটাই। কিন্তু কসবার এই ঘটনায় মেয়েদের, পড়ুয়াদের কাছে একটা মেসেজে এসে গিয়েছে। যদি আপনার কোনও পরিচিত কলেজ বন্ধ থাকায় এবং পরীক্ষা চলাকালীন তোমাদের ফোন করে বলে যে তারা একটি ইউনিট প্রজেক্টে সাহায্য করবে, তাহলে যেও না। এতে ভাল হবে না। ওই মেয়েটি যদি না যেতেন তাহলে এই ঘটনা ঘটত না। যদি যাওয়ার যদি মেয়েটি কাউকে জানিয়ে যেতেন, দুই বান্ধবীকে নিয়ে যেতেন। তাহলেও এই ঘটনা ঘটত না। ছেলেটি পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েছে, ,সেটাই দেখছি আমরা।

একই ঘটনার বিষয়ে অন্য একটি জায়গায় মদন বলেন,’আইন আছে, যদি কেউ অন্যায় করে থাকে, তার বিচার হবে। আমরা কখনও কোনও অভিযুক্তকে আড়াল করতে চাই না। কিন্তু, আমাদের সংবিধান বলে দোষী ছাড়া পেয়ে যাক আপত্তি নেই। কিন্তু নির্দোষ যেন শাস্তি না পায়। তদন্তের পরে, পুলিশের রিপোর্টের পরে আদালত যা নির্দেশ দেবে, সেটাই আমরা মেনে নেব। দোষী যারা তারা যেন অবশ্যই শাস্তি পায়। কোথাও লেখা নেই যে কেউ কারও ঘনিষ্ঠ হলে তার বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করা যাবে না। দেখতে হবে কেউ দোষী কি না। যদি দোষী না হয় তাহলে হাইপ আর মিডিয়া প্রচারের কারণে তাকে যেন দোষী না বলা হয়।

 তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে এমনিতেই এই বিতর্ক শুরু হয়েছে।আর মদনের এই মন্তব্যে তাতে ঘৃতাহুতি হয়।  এদিকে শাসক দলের দুই নেতার মন্তব্যে কড়া সমালোচনা করে বিরোধীরা।এরপর পরিস্থিতি বুঝেই মদনকে তাঁর মন্তব্যের জন্য শোকজ করে তৃণমূল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

8 − eight =