উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে সংঘাতের মাঝেই বর্ধমান, বিদ্যাসাগর ও বালুরঘাট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের বিষয়ে ওই তিন অধ্যাপককে ডেকে পাঠানো হল রাজভবনে। এর আগে শুক্রবারই রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বা ম্যাকাউটের উপাচার্যের দায়িত্বভার বুঝে নিয়েছেন গৌতম মজুমদার।
প্রসঙ্গত, উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে বিগত বেশকিছুদিন ধরেই রাজভবন-নবান্ন সংঘাতের আবহ তৈরি হয়। কিছুদিন আগে তিন মাসের অন্তর্বর্তী উপাচার্যদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর অস্থায়ীভাবে উপাচার্য নিয়োগ করেন সি ভি আনন্দ বোস। এরপরেই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী দাবি করেন, উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই এই নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল তথা আচার্য। সেক্ষেত্রে রাজ্যপালের দ্বারা নিযুক্ত অস্থায়ী উপাচার্যদের নিয়োগ ফিরিয়ে নেওয়ার অনুরোধও জানান হয় শিক্ষামন্ত্রীর তরফে। কিন্তু, তারমধ্যে মাত্র একজন বাদে বাকি দশজনই উপাচার্য পদে কাজে যোগদান করেন। এরপরই রাজ্যপাল অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করায় তাঁদের বেতনসহ অন্যান্য সমস্ত সুযোগসুবিধা বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় রাজ্যের তরফে। এমনকী সেই মর্মে নির্দেশিকাও জারি করা হয়। এই নির্দেশিকা পাঠানো হয় উচ্চশিক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির রেজিস্ট্রারদের কাছেও। তাতে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট আইন ও তার বিধি মেনে উচ্চশিক্ষা দফতরের মন্ত্রীর সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা ছাড়াই ওই নিয়োগগুলি করা হয়েছে, যা আইনত কখনওই বৈধ নয়।
এদিকে বিষয়টি গড়ায় আদালত পর্যন্ত। তবে সেই মামলায় আদালতে ধাক্কা খেতে হয় রাজ্য সরকারকে। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, রাজ্যের ১১ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত বৈধ। দায়ের হওয়া মামলাটিও খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। পাশাপাশি উপাচার্যদের বেতন-সহ অন্যান্য যে সমস্ত বন্ধ করা হয়েছিল, সেগুলিও অবিলম্বে চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয় ডিভিশন বেঞ্চের তরফে। এরপরেই রাজ্য প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বা ম্যাকাউটের উপাচার্য নিয়োগ করেন রাজ্যপাল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক গৌতম মজুমদারকে ম্যাকাউটের উপাচার্য হিসেবে বেছে নেন আনন্দ বোস। এবার এই তিন অধ্যাপককে ডেকে পাঠানও নতুন করে জল্পনা ছড়িয়েছে রাজ্যের শিক্ষামহলে।