বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারী বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, আগামী দিনে বিরোধীদের অন্যতম বড় হাতিয়ার হতে চলেছে দুর্নীতির ইস্যু। নিয়োগ দুর্নীতি মামলা থেকে শুরু করে কয়লা কেলেঙ্কারি মামলা, রোজভ্যালি-সারদা মামলা, গরু পাচার মামলা, সব অভিযোগের কথাই স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। একইসঙ্গে হুঁশিয়ারির সুরেও বললেন, ‘আমি সমস্ত তথ্য-প্রমাণ নিয়ে লড়াই করব। দুর্নীতিই হল পশ্চিমবঙ্গের একমাত্র ইস্যু।’ একইসঙ্গে তিনি হুঁশিয়ারির সুরে এও বলেন, ‘আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সারদা-যোগ নিয়ে আমি তথ্য প্রমাণ-সহ কলকাতায় সিবিআই ডিরেক্টরের অফিসে যাব। চিঠি এবং সিডি জমা দেব, নিজাম প্যালেস বা সিজিও কমপ্লেক্সে।’ শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্য ঘিরেই আপাতত সরগরম রাজ্য রাজনীতি। পঞ্চায়েত ভোটে যখন চারিদিকে ভোট লুঠ, ব্যালট কারচুপির অভিযোগ উঠছে, তখন শুভেন্দু নতুন করে উস্কে দিলেন রাজ্যের অতীতে ঘটে যাওয়া দুর্নীতির অভিযোগের প্রসঙ্গও। সঙ্গে এও বলেন, ‘পঞ্চায়েতে নির্বাচন গণনার লুঠ ইস্যু হয়েছে, কিন্তু দুর্নীতির ইস্যু হারিয়ে যায়নি।’
এরপরই বিধানসভার বিরোধী দলনেতাকে পাল্টা দেন ফিরহাদ হাকিমও। বলছেন, ‘তাহলে তো উনিও এককালে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন, ওঁর বিরুদ্ধে প্রমাণ কে দেবেন?’ এদিকে শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্যের পাল্টা দিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষও। বলছেন, ‘সারদা মামলায় শুভেন্দুর কাঁথি-যোগ, সুদীপ্ত সেনকে নিয়ে যা যা হয়েছে, সে সব তো সামনে এসে পড়েছে। কোনটা ব্যাঙ্ক ড্রাফ্ট, কোনটা বিপুল নগদ দিয়ে সেটাও সামনে এসে গিয়েছে। আদালত তো চিঠি পাঠিয়েছে, সিবিআইকে তদন্ত করে দেখার জন্য। তাই এই লাফালাফি করে পাল্টা নাটক শুরু করছেন শুভেন্দু অধিকারী।’ তৃণমূল মুখপাত্রর আরও প্রশ্ন, ‘যদি কারও বিরুদ্ধে কোনও তথ্য প্রমাণ থাকে, তাহলে উনি এতদিন নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন কেন?’ পাল্টা চ্যালেঞ্জের সুরে কুণালের দাবি, সিবিআই যেন তাঁকে ও শুভেন্দুকে একসঙ্গে বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র জয়প্রকাশ মজুমদারও বলেন, ‘নিজের ব্যাপারটা নিয়ে উনি কবে যাবেন?’ কেন এফআইআরে নাম থাকা সত্ত্বেও নারদা মামলা শুভেন্দুর বিরুদ্ধে তদন্ত নয়, তা নিয়েও প্রশ্ন জয়প্রকাশের। শুভেন্দুর উদ্দেশে তাঁর পরামর্শ, তিনি যেন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখেন।